হংকংয়ে সেনাসংখ্যা দ্বিগুণ বাড়িয়েছে চীন

গণতন্ত্রের দাবিতে গত প্রায় তিনমাস ধরে আন্দোলনে উত্তাল হংকংয়ে নিরবে সামরিক শক্তি বাড়িয়ে চলেছে চীন।

>>রয়টার্স
Published : 30 Sept 2019, 04:46 PM
Updated : 30 Sept 2019, 04:46 PM

বিদেশি দূত ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, হংকংয়ে বর্তমানে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি চীনা সেনা মোতায়েন রয়েছে।

বেইজিং গত মাসে সব সীমান্ত দিয়ে হংকংয়ে হাজার হাজার সেনা পাঠিয়েছে।

এর ব্যাখ্যায় চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়, হংকংয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মূলভূখণ্ড থেকে যে অল্প কিছু সেনা মোতায়েন করা হয় তাদের ‘দায়িত্বের পালায় নিয়মিত পরিবর্তনের’ অংশ হিসেবে নতুন সেনা নগরীতে প্রবেশ করেছে।

চীনের মূলভূখণ্ডে বন্দি প্রত্যর্পণ নিয়ে প্রস্তাবিত একটি বিল বাতিলের দাবিতে গত জুনে হংকংয়ে আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনের মুখে ওই বিল প্রথমে ‘মৃত’ এবং পরে ‘সম্পূর্ণ বাতিল’ ঘোষণা করার পরও আন্দোলন থামানো যাচ্ছে না। বরং দিন দিন পুলিশ-আন্দোলনকারী সংঘর্ষের মাত্রা বাড়ছে।

গত এক মাসে সাতজন এশীয় এবং পশ্চিমা দূত বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করে বলেন, অগাস্টের শেষ দিক থেকে যেভাবে হংকংয়ে (চীনা) সেনা মোতায়েন বেড়েছে সেটি কোনোভাবেই নিয়মিত কাজের পালা পরিবর্তনের অংশ নয়। বরং এটি শক্তিবৃদ্ধি।

ওই সাত বিদেশি দূতের অন্তত তিনজনের বিশ্বাস, জুনে সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার পর হংকংয়ে চীনা সেনাবাহিনীর উপস্থিতি দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে।

হংকংয়ে সাধারণত চীনা সেনাসদস্যের সংখ্যা তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজারের মধ্যে থাকে। কিন্তু তাদের হিসাব মতে, এখন সেই সংখ্যা ১০ থেকে ১২ হাজার।

যার অর্থ, ১৯৯৭ সালের পর এটিই হংকংয়ে পিপুলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) সবচেয়ে বড় সক্রিয় বাহিনী মোতায়েনের ঘটনা।

যুক্তরাজ্য ১৯৯৭ সালে চীনের কাছে হংকংকে হস্তান্তর করলেও, বেশ কিছু ক্ষেত্রে নগরীটি স্বায়ত্তশাসনের প্রতিশ্রুতি আদায় করে নেয়। সাবেক এ ব্রিটিশ কলোনির কারণেই চীনকে ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থাপনার’ নীতিতে চলতে হচ্ছে।

শুধু পিএলএ নয় বরং তাদের অধীনে দাঙ্গাবিরোধী আধাসামরিক বাহিনী (পিএপি) এবং স্বায়ত্তশাসিত আরেকটি কমান্ড বাহিনীর সদস্যরাও হংকংয়ে প্রবেশ করেছে বলে নিশ্চিত করেন পাঁচ কূটনীতিক।

তবে এখনো হংকংয়ে জনসম্মুখে পিএপির কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে জানতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে হংকংয়ে চীন সরকারের বিভিন্ন কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলেও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

চীনপন্থি প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামের কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে হংকং পুলিশের মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, “আমাদের পুলিশ বাহিনীই হংকংয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে সক্ষম এবং হংকংয়ের জনগণের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করবই।”

রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে কোনো সাড়া পাওয়া না গেলেও প্রতিবেদন প্রকাশের পর হংকং সরকারের ‘সিকিউরিটি ব্যুরো’ একটি বিবৃতি দিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, “আইনের কঠোর অনুশাসন মেনে ‘পিএলএ গ্যারিসন’ পরিচালিত হয়। গ্যারিসনের সদস্যদের পালা বদলের তথ্য বা তাদের প্রকৃত সংখ্যা প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত এবং সরকারের কাছে এ বিষয়ে দেওয়ার মত কোনো তথ্য নেই।”