ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে ইরান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। “তারা আমাকে নারী দর্শকদের ওই ম্যাচগুলো স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখার অনুমতি দেবে বলে নিশ্চিত করেছেন।”
আগামী ১০ অক্টোবর তেহরানে বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচে কম্বডিয়ার মুখোমুখি হবে ইরান।
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই সেখানে নারী দর্শকদের স্টেডিয়ামে গিয়ে পুরুষদের খেলা দেখা নিষিদ্ধ।
বিবিসি জানায়, সম্প্রতি এক নারী পুরুষের বেশে স্টেডিয়ামে ঢুকে প্রিয় দলের খেলা দেখার চেষ্টা করার সময় ধরা পড়ে যান এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিচারে কারাদণ্ড হতে পারে আশঙ্কায় সাহার খোদায়ারি এ মাসের শুরুতে আদালত প্রাঙ্গনের বাইরে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এক সপ্তাহ পর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
সাহারের এই নির্মম মৃত্যু ইরানের ভেতর ও বাইরে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি করে। সাহারের প্রিয় দল ছিল ‘এসতেকলাল’, যাদের জার্সির রঙ নীল। সেই অনুসারে বিশ্বজুড়ে তিনি ‘ব্লু গার্ল’ নামে পরিচিতি পান।
সারা বিশ্বের ফুটবল খেলোয়াড় ও ভক্তরা সাহারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে। এছাড়া ইউরোপের কয়েকটি নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা তার স্মরণে হাতে নীল রঙের ব্যান্ড পরে খেলতে নামেন।
ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফাকেও এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। অনেকে ফিফার কাছে ইরানকে ফুটবলে সাময়িক বরখাস্ত বা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়।
বিবিসি জানায়, ফিফা কর্মকর্তারা এক সপ্তাহ ধরে ইরানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নারী দর্শকদের স্টেডিয়ামে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন।
নারী ফুটবল নিয়ে ফিফা আয়োজিত এক সম্মেলনে ইনফান্তিনো বলেন, “আমাদের নারী দর্শক প্রয়োজন। আমরা নিশ্চিত করে বলছি, ইরানে ফুটবলের পরবর্তী আন্তর্জাতিক ম্যাচেই নারী দর্শকদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ….অথচ গত ৪০ বছর ধরে এমনটা ঘটেনি। অনেক নারী খেলা দেখতে চান।”
ইরানে দীর্ঘদিন ধরে নারীদের স্টেডিয়ামে প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। অথচ দেশটির কোনো আইনে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’।