মিয়ানমারে নার্সারির শিশু ধর্ষণ নিয়ে ক্ষোভ

মিয়ানমারে নার্সারি স্কুলের তিন বছরের একটি শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ সঞ্চার হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2019, 01:50 PM
Updated : 11 Sept 2019, 01:50 PM

বুধবার ধর্ষণ মামলায় রাজধানী নিপিদোর একটি আদালতে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সাক্ষ্য দিয়েছে ওই শিশু।

শিশুটির জন্য ন্যায়বিচারের দাবিতে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ । বিক্ষোভকারীরা শিশুটির নাম দিয়েছে ‘ভিক্টোরিয়া’।

গত ১৬ মে ধর্ষণের ঘটনার পর পুলিশ ওই স্কুলের এক গাড়ি চালককে ধর্ষক সন্দেহে আটক করলেও পরে প্রমাণের অভাবে ছেড়ে দেয়।

পুলিশ জানায়,  স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর ভিক্টোরিয়ার শরীরে আঘাতের চিহ্ন থেকে তার মা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং সেখানে পরীক্ষার পর বোঝা যায় শিশুটি যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ অং কিয়াও মিও নামে স্কুলের এক গাড়ি চালককে আটক করে। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষায় তার বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ না পাওয়ায় পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওই ব্যক্তিও নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন। অনেকে তাকে সমর্থন দিয়ে বলছেন, হয়ত তাকে ফাঁসানো হয়েছে। নিজেদের যুক্তির পক্ষে তারা একটি সিসিটিভি ফুটেজের কথা বলেন।

বিবিসি বার্মিজের হাতে পড়া ওই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন ওই ‍গাড়ি চালক স্কুল ভবনের ভেতরে যান এবং দর্শণার্থীদের বসার জায়গায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন।

কিন্তু তিনি যতক্ষণ ভেতরে ছিলেন ওই সময়ের মধ্যে ভিক্টোরিয়াকে খুঁজে বের করে তার উপর নিপীড়ন চালানো সম্ভব না।

হনিন নু নামে স্কুলের এক শিক্ষককে পুলিশ নয়বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তিনি গত জুলাইয়ে বিবিসি’কে বলেছিলেন, “তার (সন্দহভাজন গাড়ি চালক) পক্ষে এটা করা অসম্ভব। আমরা, আমরা সব শিক্ষক সব সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই ছিলাম।”

ঘটনার দিন ভিক্টোরিয়া এক মুহূর্তের জন্যও তার চোখের আড়াল হয়নি বলে দাবি করেন আরেক শিক্ষক নিলার আই।

ভিক্টোরিয়ার এ  ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ‍পুরো মিয়ানমার বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা দেশজুড়ে উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকা যৌন নিপীড়ন, বিশেষ করে শিশুদের তার শিকার হওয়া বন্ধে বিস্তৃত এবং কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

ভিক্টোরিয়ার মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও দেশটির সাধারণ মানুষ অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

তারা বলেন, প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ যাকে আটক করেছিল তিনি আসলে বলির পাঁঠা। আসল অপরাধীরা এখনো আড়ালেই রয়ে গেছে।

ভিক্টোরিয়ার এ ঘটনার পর মিয়ানমার সরকার শিশু নিরাপত্তায় নতুন একটি আইন প্রণয়ন করতে চলেছে।

নতুন আইনে কেউ অভিযোগ না করলেও পুলিশ উদ্যোগী হয়ে উন্মুক্ত তদন্ত চালাতে পারবে।

যদিও পুলিশ কর্মকর্তাদের এরকম সংবেশদশীল বিষয় নিয়ে কাজ করার দক্ষতা এবং যোগ্যতা নিয়ে অনেকের মনেই গভীর সন্দেহ রয়েছে।