গ্রিনল্যান্ড জেরে ডেনমার্ক সফর বাতিল করলেন ট্রাম্প

গ্রিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রির জন্য নয়, ডেনমাকের প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের জেরে দেশটিতে একটি রাষ্ট্রীয় সফর বাতিল করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

ডেনমার্কের রানি মারগ্রেথে টু এর আমন্ত্রণে ২ সেপ্টেম্বর তার ডেনমার্কে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ট্রাম্প তা বাতিল করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি, বার্তা সংস্থা রয়টার্স। 

যুক্তরাষ্ট্র স্বায়ত্তশাসিত ডেনিশ অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড কিনতে আগ্রহী বলে গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। এই প্রস্তাবকে ‘অবাস্তব’ বলে উড়িয়ে দিয়ে ট্রাম্প গুরুত্বসহকারে এটি বলেননি, তিনি এমনটিই ধারণা করছেন বলে জানিয়েছেন জুনে ক্ষমতায় আসা ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফেডেরিকসন। 

কিন্তু মঙ্গলবার টুইটারে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেছেন, “ডেনমার্ক দারুণ দেশ, এর লোকজন অসাধারণ; কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মেটে ফেডেরিকসনের মন্তব্যের ভিত্তিতে যে গ্রিনল্যান্ড বিক্রয়ের বিষয়ে আলোচনা করার কোনো আগ্রহ তার নেই, আমি দুই সপ্তাহের মধ্যে হতে যাওয়া আমাদের বৈঠকটি অন্য কোনো সময়ের জন্য তুলে রাখছি।”

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সফর বাতিল করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা।

তিনি জানিয়েছেন, ডেনমার্কে সেপ্টেম্বর ২-৩ তারিখের সফর বাতিল করেছেন ট্রাম্প।

নেটো মিত্র ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে প্রধানমন্ত্রী ফেডেরিকসন ও গ্রিনল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী কিম কিয়েলসেনের সঙ্গে ট্রাম্পের আর্কটিক নিয়ে আলোচনা করার কথা ছিল।

৩১ অগাস্ট ট্রাম্পের পোল্যান্ড যাওয়ার কথা রয়েছে। 

ট্রাম্পের শীর্ষ একজন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা, বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপটি কিনতে যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই আগ্রহী নিশ্চিত করার পর রোববার ফেডেরিকসন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রিনল্যান্ড বিক্রি করার ধারণা অবাস্তব বলে মন্তব্য করেন। 

গ্রিনল্যান্ডে এক সফরের সময় সারমিটসিয়াক সংবাদপত্রকে তিনি বলেন, “গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। গ্রিনল্যান্ড ডেনিশ না। গ্রিনল্যান্ড গ্রিনল্যান্ডেরই। এটি গুরুত্বসহকারে বলা হয়নি, জোরালোভাবে এমনটিই আশা করছি আমি।”

তিনি সম্প্রতি গ্রিনল্যান্ড কেনার সম্ভব্যতা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে রোববার সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছিলেন ট্রাম্প, তবে এ পদক্ষেপ এখনই অগ্রাধিকার পাচ্ছে এমনটি নয় বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

“এই ধারণাটি এলো আর কৌশলগতভাবে এটি আগ্রহোদ্দীপকও,” বলেছিলেন তিনি।

১৯৫১ সালে ডেনমার্কের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের করা একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী উত্তর গ্রিনল্যান্ডের থুলে বিমান ঘাঁটির ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর অধিকার আছে।  

উত্তর আটলান্টিক ও আর্কটিক মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত সুবৃহৎ দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের একটি স্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃত।

কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নর্দান সামরিক বিমান ঘাঁটি রয়েছে গ্রিনলান্ডে। ডেনমার্কের সঙ্গে ১৯৫১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তির আওতাতেই নর্দার্ন গ্রিনল্যান্ডে বিমান ঘাঁটি করে সামরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করে যুক্তরাষ্ট্র।