সোমবার এ দেয়ালচিত্র উন্মোচিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। পেরুর রাজধানী লিমার উত্তরে ভিচামা সাইটে একটি সরকারি ভবনের ভেতর দেয়ালচিত্রটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ভবনটিতে সরকারি নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হত। সেখানে আরো বেশকিছু প্রাচীন দেয়ালচিত্র পাওয়া গেছে। যার মধ্যে মানুষের মত দেখতে ব্যাঙ এবং মানুষকে উপস্থাপন করা হয়েছে।
কারাল আর্কিওলজিক জোনের পরিচালক ড. রুথ শ্যাডি সলিসের বিশ্বাস, ওইসব দেয়ালচিত্রে বৃষ্টি থেকে ‘পানি আসার’ ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আন্দীয় সভ্যতায় ব্যাঙ ছিল পানির প্রতীক। “দেয়ালচিত্রে ব্যাঙের মত দেখতে মুখের নিচে মানুষের যে মুখ দেখা যাচ্ছে সেটার অর্থ প্রাণের ধারা বজায় রাখতে মানুষ বৃষ্টির অপেক্ষা করছে।”
কাছেই পাওয়া অন্য একটি দেয়ালচিত্রে চারটি মানুষের মাথা দেখা যায়। যাদের অসংখ্য সাপ ঘিরে রেখেছে। সেখানে একটিমাত্র মুখে একটি বীজ দেখা যাচ্ছে।
গবেষকরা বলেন, ওই ভাষ্কর্যে খুব সম্ভবত অভাব ও দুর্ভিক্ষের সময়ে কথা বলা হচ্ছে।
সেখানে আরেক গবেষক তাতিয়ানা আবেদ বলেন, ওই দেয়ালচিত্রগুলো সেখানে মানুষের অস্তিত্বের ‘সংকটের’ সময়ে কথা বলছে।
রাজধানী লিমা থেকে ১৫০ কিলোমিটার উত্তরে ভিচামা সাইট হুয়াউরা প্রদেশের অন্তর্গত।
২০০৭ সাল থেকে সেখানে খোদাই কাজ শুরু হয়। বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, সেখানকার প্রাচীন বাসিন্দারা কৃষিজীবী এবং মৎসজীবী ছিলেন।
কারাল সভ্যতার লোকজন যেসব জায়গায় বসবাস করত সেগুলোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কেন্দ্র ছিল ভিচামা সাইট। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে কারাল সভ্যতা গড়ে উঠে।
‘সিক্রেট সিটি অব কারাল’ পেরুর বারানকা প্রদেশে অবস্থিত। কারাল সভ্যতাকে এখন পর্যন্ত সন্ধান পাওয়া আমেরিকার সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা বলে বিশ্বাস করা হয়।
ইউনেস্কো ২০০৯ ভিচামা সাইকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ বলে ঘোষণা করে।
খ্রিস্টপূর্ব ১৮শতকে কারাল সভ্যতা রহস্যজনকভাবে পৃথিবীর বুক থেকে নিঃশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
ড. শ্যাডি বলেন, ভিচামা সাইটে আবিষ্কার হওয়া নতুন দেয়ালচিত্রগুলো সম্ভবত ওই রহস্যের উত্তর হতে যাচ্ছে। কারণ সেগুলো ওই সময়ে সেখানকার জলবায়ুর পরিবর্তনের কথা বলছে।