কাশ্মীরে ‘গুলি’, পুলিশের অস্বীকার

বিশেষ মর্যাদা হারানো কাশ্মীরে নানা জায়গায় হচ্ছে বিক্ষোভ; বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ‘চলছে গুলি’। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এ ধরনের তথ্য এলেও কাশ্মীর পুলিশ তা অস্বীকার করে বলেছে, ‘পরিস্থিতি শান্ত, জনগণ ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত’।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 August 2019, 07:58 AM
Updated : 11 August 2019, 07:58 AM

গত ৫ অগাস্ট বিশেষ স্বায়ত্তশাসন রদ করার একদিন আগে থেকেই কাশ্মীর উপত্যকায় ল্যান্ডফোন, মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে হাজার হাজার সেনা, জারি করা হয়েছে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ।

ফলে সেখানকার প্রকৃত অবস্থা জানা যাচ্ছে না।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম নিজেদের প্রতিনিধি পাঠিয়ে খবর সংগ্রহের চেষ্টা করছে।

ছবি: বিবিসি

বিবিসি শনিবার এরকম একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে জানায়, শুক্রবার জুমার নামাজের জন্য কারফিউ কিছুটা শিথিল করার সুযোগে মাত্র আধাঘন্টার মধ্যে রাজধানী শ্রীনগরের  ঈদগাহ ময়দানে শত শত মানুষ জড়ো হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, হাজার হাজার বিক্ষোভকারী কাশ্মীরের স্বাধীনতার পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। তাদের কারও হাতে কালো পতাকা, কারও বা সবুজের ওপরে চাঁদতারা আঁকা পতাকা, কারও হাতে 'উই ওয়ান্ট ফ্রিডম' লেখা পোস্টার।

বিক্ষোভের এক পর্যায়ে পুলিশ টিয়ারগ্যাসের শেল ও ছররা গুলি নিক্ষেপ করে, যাতে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।

বিবিসির প্রতিনিধি জানান, নিরাপত্তা বাহিনী প্রথমে মানুষকে জড়ো হতে বাধা দেয়নি।

ছবি: বিবিসি

কিন্তু কিছুক্ষণ পরে একজায়গায় প্রথমে শূন্যে গুলি চালায় তারা, তারপর বিক্ষোভকারীদের দিকে ছররা গুলি ছোড়ে।

তার পাঠানো ভিডিওতে গুলি শুরুর পর বিক্ষোভকারীদের ছুটোছুটি করতেও দেখা যায়।

ভিডিওতে গুলি ছোড়ার শব্দ পাওয়া যায়। তারপর বিক্ষোভকারীদের প্রাণভয়ে ছুটতে দেখা যায়, অনেকেই আড়াল খুঁজছিলেন। কেউ কেউ আবার মাটিতে শুয়ে পড়ছেন বা হামাগুড়ি দিয়ে নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

ওই দিন রাত ১১টা ৫১ মিনিটে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ টুইটারে এক বিবৃতিতে জনগণকে কোনো ধরনের গুজব ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত খবরে বিশ্বাস না করার অনুরোধ জানিয়েছে বলে, গত ছয় দিনে কাশ্মীরে একটি গুলিও ছোড়া হয়নি।

ছবি: বিবিসি

“পরিস্থিতি শান্ত আছে, জনগণ সহায়তা করছে এবং সবকিছু আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে নিরাপত্তা কড়াকড়িও শিথিল হচ্ছে। শ্রীনগর এবং অন্যান্য শহরে সড়কে প্রচুর মানুষ চলাচল করছে। আজ স্থানীয়রা ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করেছে।”

পুলিশের পক্ষ থেকে নিজেদের দাবির পক্ষে শ্রীনগরের ব্যস্ত সড়কের কিছু ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে বলেও রোববার জানায় এনডিটিভি।

কাশ্মীর পুলিশের মহাপরিচালক দিলবাগ সিংহ বলেন, “পাথর ছোড়ার দুইএকটা ছোট ঘটনা ছাড়া সেখানে অবাঞ্ছিত কোনো ঘটনা ঘটেনি।”

এদিকে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শনিবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, “গত কয়েক দিনে শ্রীনগর ও বারামুল্লায় ছোট ছোট কয়েকটি বিক্ষোভ হয়েছে, যেগুলোতে বেশি হলে ২০ জনের মত লোক ছিল।

“সংবাদমাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার যে খবর এসেছে তা মনগড়া ও অসত্য।”