যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার ইঙ্গিত ইরানের

ইরানি স্থাপনায় মার্কিন সাইবার হামলা ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দিয়েছে ইরান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2019, 02:10 PM
Updated : 24 June 2019, 04:25 PM

সোমবার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির এক উপদেষ্টা শর্তসাপেক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক থাকার এ ইঙ্গিত দেন।

যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে এবং নতুন কোনো প্রণোদোনামূলক প্রস্তাব দিলে ইরান ওয়াশিংটনের সঙ্গে নতুন ছাড়ের বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত বছর ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর তেহরানের ওপর পুরোনো সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করাসহ নতুন করে আরো নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পর থেকেই সংকটের শুরু।

সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। ওমান উপসাগরে তেলের ট্যাংকারে হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে দোষারোপ করেছে। ওদিকে ইরান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত সপ্তাহে ইরান তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগে একটি মার্কিন গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ড্রোনটি আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি বলে দাবি করেছে।

ড্রোন ভূপাতিতে ঘটনার জেরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ইরানের কয়েকটি লক্ষ্যে হামলার অনুমোদন দিতে চেয়েও পরে পিছু হটেন। এরপরই ইরানের অস্ত্রব্যবস্থার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার হামলার খবর জানায় মার্কিন গণমাধ্যম।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ পত্রিকা শনিবার বলেছে, পূর্বপরিকল্পিত এ সাইবার হামলায় ইরানের রকেট উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ওই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ইরানের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ আজারি জাহরোমি বলেন, “তারা অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু সফল হামলা চালাতে পারেনি। সংবাদমাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে সত্যি কি তারা ইরানের বিরুদ্ধে সাইবার হামলা চালিয়েছে। গত বছর আমরা ইরানি ফায়ারওয়াল দিয়ে ৩ কোটি ৩০ লাখ হামলা ঠেকিয়েছি।”

যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররা দুদেশের এ উত্তেজনার প্রেক্ষপটে যে কারো একটি ছোট্ট ভুল থেকে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে সংকট মিটিয়ে ফেলার আহ্বান জানাচ্ছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরান দুপক্ষই সংযত থাকার ইঙ্গিত দিয়ে বলছে তারা আলোচনায় ইচ্ছুক। তবে একে অপরকে আগে তাদের আচরণ পরিবর্তন করার দাবি জানাচ্ছে।

এ পরিস্থিতির মধ্যেই সবশেষ ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির উপদেষ্টা হিশামেদ্দিন আশেনা যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পুরোনো দাবি আবার তুলেছেন।

তবে একইসঙ্গে একটি টুইটে তিনি নতুন ছাড় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা থাকারও আভাস দিয়ে বলেন, চুক্তির বাইরে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কিছু নতুন প্রণোদনা প্রস্তাব দিলে ইরান আলোচনার টেবিলে আসবে।

তিনি বলেন, “তারা পারমাণবিক চুক্তির বাইরে কিছু চাইলে ওই চুক্তির বাইরে কিছু প্রস্তাবও তাদের দেওয়া উচিত। তাতে যেন আন্তর্জাতিক গ্যারান্টিও থাকে।”

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মৌসাভিও সোমবার বলেছেন, “ইরান উত্তেজনা বাড়াতে চায়না এবং এর খারাপ পরিণতিও ডেকে আনতে চায় না।”

ওদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও এর আগে রোববার বলেছেন, তিনিও ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চান না। বরং তিনি দেশটির সঙ্গে একটি চুক্তি করতে প্রস্তুত থাকবেন।