সোমবার কারাগার থেকে ছাড়া পান ২২ বছরের জশুয়া। ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ পত্রিকা জানায়, ছাড়া পাওয়ার পরপরই জশুয়া হংকংয়ের সরকারি ভবনগুলোর পাশের একটি পার্কে জড়ো হওয়া আন্দোলনকর্মীদের সঙ্গে যোগ দেন।
চীনপন্থি প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামের পদত্যাগের দাবিতে রোববার হংকংয়ের হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে।
আয়োজকদের দাবি প্রায় ২০ লাখ মানুষ ওই বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়েছেন।
দুই মাস আগে জশুয়া যে পোশাকে কারাগারে গিয়েছিলেন এদিন তিনি সেই পোশাকেই পার্কে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন।
পরে সাংবাদিকদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি আন্দোলনের ওই সব গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত এবং গত সপ্তাহের কর্মসূচিতে অংশ নিতে না পারার অভাব বোধ করেছি।
“কারাগারে থাকার কারণে আমি তাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারিনি। তাই ছাড়া পাওয়ার পরই তাদের প্রতি আমার সমর্থন জানাতে এবং ধন্যবাদ দিতে এখানে এসেছি।”
পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালে চীনের শাসন থেকে মুক্ত হতে হংকংয়ে শিক্ষার্থীদের যে আন্দোলন হয়েছিল তাতে অগ্রণী ভূমিকা রাখা জশুয়া বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পান।
নিজেদের নেতা বেছে নেওয়া ক্ষমতা নিজেদের হাতে পেতে সেবার হংকংয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছিলেন, যেটি ‘আমব্রেলা মুভমেন্ট’ নামে পরিচিত।
হংকংয়ের বাসিন্দারা আবারও রাস্তায় নেমেছেন। এবার প্রত্যর্পণ নিয়ে প্রস্তাবিত একটি বিলের কারণে, যেটি পরবর্তীতে ক্যারি লামের পদত্যাগের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।
প্রস্তাবিত ওই বিলে হংকংয়ের আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত সেখাকার যে কোনো বাসিন্দাকে বিচারের জন্য তাইওয়ান, ম্যাকাউ কিংবা চীনের মূলভূখণ্ডে পাঠানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।
বেইজিংপন্থি হংকং সরকারের যুক্তি, প্রত্যপর্ণের সুযোগ না থাকায় হংকং চীনের অন্যান্য অংশের অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
মানবাধিকার লংঘন রুখতে ‘রক্ষাকবচ’ হিসেবে হংকংয়ের আদালতকেই মামলা ধরে ধরে প্রত্যর্পণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ারও বিলে দেওয়া হয়েছে, ভাষ্য তাদের।
অন্যদিকে, একে ব্যবহার করে চীন হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি রাজনীতিকদের ওপর দমনপীড়ন চালাতে পারে বলে আশঙ্কা সমালোচকদের।
বিলটি কার্যকর হলে হংকংয়ের বেইজিংবিরোধী হিসেবে পরিচিতরা কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রণাধীন চীনের বিচার ব্যবস্থার জালে আটকা পড়বেন বলে আশঙ্কা বিরোধীদের।
আন্দোলনের মুখে ক্যারি লাম প্রস্তাবিত বিল স্থগিত করেছেন এবং ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু আন্দোলনকারীরা ওই বিল পুরোপুরি বাতিল করার দাবি জানিয়েছে।