‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ বন্ধ করতে চীনের প্রতি আহ্বান তুরস্কের

আটকাবস্থায় সংখ্যালঘু উইঘুর জনগোষ্ঠীর প্রখ্যাত এক সুরকারের মৃত্যুর প্রতিবেদনের পর চীনকে তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পগুলো বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে তুরস্ক।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2019, 07:39 AM
Updated : 10 Feb 2019, 07:39 AM

বিবিসি জানিয়েছে, চীনের শিনজিয়াং অঞ্চলে সুরকার আব্দুরেহিম হেয়িত আট বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন বলে ধারণা করা হয়। অঞ্চলটিতে প্রায় ১০ লাখ উইঘুরকে আটক করে রাখা হয়েছে বলে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

শনিবার এক বিবৃতিতে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, উইঘুররা ‘কনসনট্রেইশন ক্যাম্পগুলোতে নির্যাতিত’ হচ্ছে।

অপরদিকে ওই স্থাপনাগুলোকে ‘পুনঃশিক্ষা ক্যাম্প’ বলে দাবি করেছে চীন।

বিবৃতিতে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হামি আকসোদ বলেছেন, “এটা আর গোপন নেই যে ১০ লাখেরও বেশি উইঘুর তুর্কি বাছবিচারহীনভাবে গ্রেপ্তার হয়ে নির্যাতন ও রাজনৈতিক মগজ-ধোলাইয়ের শিকার হচ্ছেন।”

যারা বাইরে আছেন তারা ‘প্রবল চাপের মধ্যে’ আছেন বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করেছেন তিনি।

উইঘুররা চীনের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং অঞ্চলের তুর্কিভাষী মুসলিম জনগোষ্ঠী। 

আকসোদ বলেছেন, “একুশ শতাব্দিতে কনসনট্রেইশন ক্যাম্পের পুনঃপ্রবর্তন এবং উইঘুর তুর্কিদের বিরুদ্ধে চীনা কর্তৃপক্ষগুলোর পদ্ধতিগত আত্তীকরণ নীতি মানবতার পক্ষে অত্যন্ত বিব্রতকর।”

তিনি আরও বলেছেন, হেয়িতের মৃত্যুতে ‘শিনজিয়াংয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তুরস্কের জনগণের প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র হয়েছে’।

সেখানকার ‘শোচনীয় মানবিক পরিস্থিতির অবসান ঘটানোর জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য’ তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

হেয়িতের মৃত্যুর খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তবে তার মৃত্যুর এ খবর সরকারিভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।

হেয়িত একজন প্রখ্যাত দোতারা বাদক ছিলেন। এক সময় পুরো চীনের শ্রদ্ধা অর্জন করেছিলেন এই শিল্পী। তিনি বেইজিংয়ে মিউজিক নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন এবং জাতীয় শিল্পী দলগুলোর সঙ্গে দোতারা বাজাতেন।

‘বাবা’ নামের একটি গান গাওয়ার জন্য তাকে আটক করা হয় বলে জানা গেছে। একটি উইঘুর কবিতা থেকে গানটির কথাগুলো নেওয়া হয়েছিল। ওই কবিতায় উইঘুর তরুণ প্রজন্মকে তাদের পূর্ববর্তীদের ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান ছিল।

কিন্তু ওই গানের কথার দুটি শব্দ, ‘যুদ্ধের শহীদ’, চীনা কর্তৃপক্ষকে এ ভাবনার দিকে নিয়ে যায় যে হেয়িত সন্ত্রাসবাদের হুমকি হয়ে উঠছেন।

চীন জানিয়েছে, শিনজিয়াংয়ের ডিটেনশন ক্যাম্পগুলো ‘ভোকেশনাল এডুকেশন সেন্টার’ এবং এগুলো ওই অঞ্চলের সন্ত্রাসবাদ প্রশমিত করতে ডিজাইন করা হয়েছে।