কেনিয়ার হোটেলে হামলা: হামলাকারী জঙ্গি ও অন্তত ২১ জন নিহত

নাইরোবির একটি অভিজাত হোটেল কমপ্লেক্সে হানা দেওয়া সব সোমালি জঙ্গি কেনীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2019, 04:25 PM
Updated : 17 Jan 2019, 06:12 AM

এ ঘটনায় হামলার শিকার অন্তত ২১ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে বুধবার জানিয়েছে দেশটির সরকার, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

হামলা শুরু হওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে কয়েকশত লোককে উদ্ধার করা গেলেও ওই কমপ্লেক্সটিতে থাকা আরও প্রায় ৫০ জন বুধবার বিকাল পর্যন্ত নিখোঁজ ছিলেন বলে জানিয়েছে কেনিয়া রেডক্রস; এতে শেষ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে। 

মঙ্গলবার বিকালে হামলা শুরু হওয়ার ২০ ঘন্টা পর ঘটনার অবসান ঘোষণা করেন কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা। এরপর পাঁচ হামলাকারীর রক্তাক্ত মৃতদেহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সম্প্রচার করা হয়।

২০১৩ সালে নাইরোরির এই একই এলাকার ওয়েস্টগেট শপিং সেন্টারে একই ধরনের আরেকটি জঙ্গি হামলায় ৬৭ জন নিহত হয়েছিল।

আল কায়েদার অনুগত সোমালি জঙ্গিগোষ্ঠী আল শাবাব এ হামলার দায় স্বীকার করে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশোধ নিতে তারা এ হামলা চালিয়েছে।

জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট কেনিয়াত্তা বলেছেন, “নিরাপত্তা অভিযান শেষে হয়েছে এবং সব সন্ত্রাসী নির্মূল হয়েছে।”

তবে মোট কতোজন হামলাকারী ছিল তা উল্লেখ করেননি তিনি, কিন্তু সিসিটিভির ক্লিপগুলোতে কালো পোশাক পরা অন্তত পাঁচ হামলাকারীদের দেখা গেছে; তাদের কারো কারো গায়ে সবুজ রংয়ের গ্রেনেড বেল্টও ছিল।

একটি ক্লিপে দেখা গেছে, এক জঙ্গি একটি রেস্তোরাঁর বাইরে অপেক্ষা করছেন আর বিকাল ৩টা বাজার পরপরই বিস্ফোরণে সে নিজেকে উড়িয়ে দিয়ে ছিন্নিভিন্ন হয়ে যাওয়া জিনিসের মেঘের মধ্যে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

প্রবেশ পথের কাছে আরেকটি বিস্ফোরণে, সম্ভবত গ্রেনেডের, তিনটি গাড়িতে আগুন ধরে যায় আর এরপর চার ব্যক্তি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি করতে করতে এসে দুই দলে ভাগ হয়ে যায়।

এদের একটি দল পাশের অফিস ভবনে প্রবেশ করে লবিতে একটি গ্রেনেড ছেড়ে যায় বলে হামলার সময় সেখানে উপস্থিত এক বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন। তারপর তারা লিফটে গুলিবর্ষণ করে এবং ছয়তলা পর্যন্ত উঠে আহতদের খোঁজে তল্লাশি চালায়।

অপর দল গুলি চালিয়ে ‘সিক্রেট গার্ডেন’ রেস্তোরাঁ তছনছ করে দেয়। শেষে হামলাকারী জঙ্গিরা হোটেলে সর্বোচ্চ তলায় বা তার কাছে অবস্থান নিয়ে পলায়মান লোকজনকে গুলি করতে থাকে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পুলিশ প্রধান যোশেফ বোয়িনেট জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে এক পুলিশ সদস্যসহ ১৬ জন কেনীয়, টুইন টাওয়ার হামলার ঘটনায় বেঁচে যাওয়া এক মার্কিন ও এক ব্রিটিশ উন্নয়ন কর্মী রয়েছেন। এ ঘটনায় আরও তিন আফ্রিকান নিহত হলেও তাদের পরিচয় শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।