জাতিসংঘের সুরক্ষায় থাই বিমানবন্দর ছাড়লেন সৌদি তরুণী

অবশেষে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার তত্ত্বাবধানে ব্যাংকক বিমানবন্দর ছেড়েছেন সৌদি আরবের তরুণী রাহাফ মোহাম্মদ মুতলাক আল-কুনুন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2019, 05:34 PM
Updated : 7 Jan 2019, 08:10 PM

থাইল্যান্ডের অভিবাসন পুলিশ প্রধান সোমবার একথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “রাহাফ এখন জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তত্ত্বাবধানে আছেন। কিন্তু আমরা থাই নিরাপত্তা কর্মকর্তাদেরকেও তার দেখভাল করতে পাঠিয়েছি।”

রাহাফ তৃতীয় কোনো দেশের আশ্রয় খুঁজতে কিছু সময়ের জন্য থাইল্যান্ডে থাকতে চান বলেও জানান ওই পুলিশ প্রধান। অন্যদিকে, রাহাফকে বিমানবন্দর থেকে শহরের একটি নিরাপদ স্থানে নেওয়ার কথা জানান জেনেভায় ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র।

রাহাফ বলেছেন, থাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতার মধ্য দিয়ে ইউএনএইচসিআর এর সুরক্ষায় তিনি এখন নিরাপদ বোধ করছেন এবং শেষ পর্যন্ত তার পাসপোর্টও ফিরে পেয়েছেন।

পরিবারের সঙ্গে কুয়েত ভ্রমণে থাকার সময় গত শুক্রবার ১৮ বছরের তরুণী রাহাফ পালিয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেন। কুয়েত এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে তিনি ব্যাংকক বিমানবন্দরে যান। এখান থেকে তার অস্ট্রেলিয়াগামী ফ্লাইটে উঠার কথা ছিল।

কিন্তু ব্যাংকক বিমানবন্দরে সৌদি আরবের একজন কূটনীতিক তার সঙ্গে দেখা করে তার পাসপোর্ট জব্দ করে বলে দাবি রাহাফের। সোমবার তাকে জোর করে কুয়েত ফেরত পাঠানো হতে পারে আশঙ্কায় মরিয়া রাহাফ নিজের অবস্থার কথা বিশ্ববাসীকে জানাতে রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আশ্রয় নেন।

টুইটারে নিজের ছবি ও পাসপোর্টের ফটোকপি প্রকাশ করে বলেন, কুয়েতে পাঠানো হলে তার পরিবার তাকে সেখান থেকে সৌদি আরব নিয়ে গিয়ে হত্যা করবে। রাহাফ জানান, তিনি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করায় পরিবার তার উপর ক্রুদ্ধ হয়েছে।

থাইল্যান্ড বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ শুরুতে তাকে কুয়েত ফেরত পাঠাতে চেয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের অনুরোধ উপেক্ষা করে সোমবার স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১টার দিকে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তাকে তুলে দেওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু সোমবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) রাহাফকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা বাদ দিতে থাইল্যান্ডকে অনুরোধ করে। এরপরই এদিন বিকেলে থাই অভিবাসন পুলিশ প্রধান জানান, রাহাফকে আপাতত ফেরত না পাঠিয়ে থাইল্যান্ডে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

থাইল্যান্ড জাতিসংঘের ‘রিফিউজি কনভেনশন’ চুক্তিতে সাক্ষর করেনি। যে কারণে সেখানে শরণার্থীদের কোনো আইনি সুবিধা তারা দিতে পারে না। যদিও দেশটিতে এক লাখের বেশি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে।

থাই অভিবাসন পুলিশ প্রধান সুরাচাত হাকপার্ন বলেন, ইউএনএইচসিআর ৫ দিন সময় নিয়ে রাহাফের স্ট্যাটাস দেখবে। তারপর আরো ৫ দিন সময় নিয়ে তার ভ্রমণের ব্যবস্থা করবে।

তাছাড়া, থাইল্যান্ডের সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করতে সৌদি কূটনীতিকদের সঙ্গে মঙ্গলবার তিনি একটি বৈঠকও করবেন বলে জানান হাকপার্ন।