প্যারিসে ‘ইয়েলো ভেস্ট’ প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ

ফ্রান্সে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ‘ইয়েলো ভেস্টের’ পরিকল্পিত বিক্ষোভ প্রদর্শনের শুরুতেই বাধা দিয়েছে পুলিশ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2018, 02:05 PM
Updated : 8 Dec 2018, 02:17 PM

শনিবার রাজধানী প্যারিসে বিক্ষোভ শুরুর পরপরই আন্দোলনকারীদের দিকে কাঁদুনে গ্যাস ছুড়েছে ফ্রান্সের দাঙ্গা পুলিশ, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।  

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর প্রশাসনের অধীনে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদে কয়েক সপ্তাহ ধরে ছুটির দিনগুলোতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছে ‘ইয়েলো ভেস্ট’ নামে পরিচিতি পাওয়া আন্দোলনকারীরা।

তারা ট্র্যাক্সি চালকদের ব্যবহৃত হলুদ রঙয়ের বিশেষ ধরনের জ্যাকেট পরে প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার কারণে এ আন্দোলনটিকে ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলন নামে অভিহিত করা হচ্ছে।

পুলিশের এক মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্যারিসের শঁজে এলিজে বুলেভার্ডে প্রায় ১,৫০০ আন্দোলনকারী অবস্থান নিয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পুলিশ ৫৭৫ জনকে তল্লাশি করে সাময়িকভাবে গ্রেপ্তার করেছিল এবং হাতুরি, বেসবল ব্যাট ও ধাতুর পেট্যাঙ্ক বলের মতো সম্ভাব্য ‘অস্ত্র’ পাওয়ায় ৩৬১ জনকে হেফাজতে নিয়েছে।

শত শত প্রতিবাদকারী বুলেভার্ডটির আর্ক দ্য থিঁয়ুফ মনুমেন্টের কাছে জড়ো হয়েছে। গত শনিবারের প্রতিবাদের সময় এই মুনমেন্টটিতে ম্যাক্রোঁ বিরোধী গ্রাফিতি এঁকে রেখেছিল আন্দোলনকারীরা। ওই দিন পুলিশের সঙ্গে দাঙ্গার সময় আন্দোলনকারীরা বহু গাড়ি জ্বালিয়ে দেয় ও দোকান লুট করে।

১৯৬৮ সালের মে মাসে হওয়া দাঙ্গার পর ওই দিনই প্যারিসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাঙ্গার ঘটনাটি ঘটে। 

প্যারিসের অন্যান্য এলাকায়ও লোকজনের বড় বড় দল জমায়েত হচ্ছে এবং তারা প্যারিসের পূর্বাঞ্চলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সেখানে বিকালে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে একটি সমাবেশের কথা রয়েছে। আরও কিছু আন্দোলনকারী প্যারিসের চতুর্দিক বেষ্টনকারী রিং রোড কিছু সময়ের জন্য অবরোধ করে রেখেছিল।  

ফ্রান্সের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় আরিয়েজ থেকে আসা বিক্ষোভকারী জিল নুবলে জানিয়েছেন, তারা ১১ ঘন্টা ট্রেন জার্নি করে প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার জন্য এসেছেন।

“আমাদের শাসনকারী টেকনোক্র্যাটরা আমাদের অবহেলা করছে,” বলেছেন তিনি।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে যারাই দোকানপাট বা অন্যান্য সরকারি সম্পত্তি ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করছিল, দ্রুত হস্তক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছিল দাঙ্গা পুলিশের ছোট ছোট দল।

আসন্ন বড়দিনের আগে যে ছুটির দিনটি উৎসবমুখর কেনাকাটার দিন হওয়ার কথা ছিল, দোকানপাট ও অন্যান্য স্থাপনা বন্ধ থাকায় সে দিনটিতে প্যারিসকে একটি ভুতুড়ে শহরের মতো মনে হচ্ছিল বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

লুটপাট থেকে রক্ষা করতে অনেক দোকানের সামনের অংশটি কাঠের তক্তা লাগিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা যেন ছুড়ে মারার কাজে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য রাস্তায় থাকা নির্মাণ সামগ্রি ও আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।  

শহরে পর্যটকের উপস্থিতি কম ছিল এবং শহরের বাসিন্দাদের সম্ভব হলে বাসায় অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বহু সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে এবং আইফেল টাওয়ার মতো স্থাপনা ও লুভের মতো বিখ্যাত কয়েকটি মিউজিয়াম বন্ধ রাখা হয়েছে। 

আন্দোলনকারীদের প্রতি শান্ত থাকার আবেদন জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এদুয়া ফিলিপ।