ভারতের লোকসভার সাবেক স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু

ভারতের লোকসভার সাবেক স্পিকার ও সিপিএম দলীয় সাবেক সাংসদ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় মারা গেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2018, 06:24 AM
Updated : 13 August 2018, 06:24 AM

সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টার পর দক্ষিণ কোলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান বলে খবর আনন্দবাজার পত্রিকা, এনডিটিভির।

জুনের শেষ দিকে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে হাসপাতালে আনা-নেওয়ার মধ্যেই ছিলেন তিনি। ২৯ জুলাই তার ৮৯ বছর পূর্ণ হয়েছিল।

সোমনাথ ১৯৬৮ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত টানা ৪০ বছর ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির (মার্ক্সিস্ট) সদস্য ছিলেন। সাংসদ হিসেবে ১০বার তিনি ভারতীয় পার্লামেন্টে দলটির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাকে দলটির অন্যতম সফল রাজনীতিবিদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

১৯২৯ সালে আসামের তেজপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। কোলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ, কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে বিলাতের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। ব্যারিস্টার হওয়ার পর আইনজীবী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন কোলকাতা হাইকোর্টে।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি মাত্র একবার নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিলেন। ১৯৮৪ সালের নির্বাচনে যাদবপুর আসনে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি।

২০০৮ সালে সোমনাথ ভারতের লোকসভার স্পিকার থাকাকালীন ওই সময়ের কেন্দ্রীয় ইউপিএ-১ সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছিল তার দল সিপিএম। সরকারের বিপক্ষে তিনি যেন ভোট দিতে পারেন তার জন্য স্পিকার পদ থেকে তাকে পদত্যাগ করতে বলেছিল দল। কিন্তু স্পিকার হিসেবে তিনি ‘দলীয় রাজনীতির উর্ধে’, এই যুক্তি দেখিয়ে পদত্যাগ করেননি সোমনাথ।

এ কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিল সিপিএম। এ নিয়ে প্রথমে নিরবতা পালন করলেও পরে বলেছিলেন, “সেটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।”

দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধ্যক্যজনিত বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছাড়াও তার কিডনি অকেজো হয়ে গিয়েছিল।

ডায়ালিসিস চলাকালেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পেসমেকার বসানো হলেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তার ফুসফুসেও সংক্রমণ ধরা পড়ে।  

১ অগাস্ট হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পাঠানো হলেও বৃহস্পতিবার তাকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সোমবার তার ডায়ালিসিস হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক কন্যা রেখে গেছেন তিনি।