বুধবার চীনা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বিবিসি ডুবে যাওয়া সানচির আশপাশে ১০০ বর্গকিলোমিটার পানিতে চারটি আলাদা স্তরে তেল ছড়িয়ে পড়ার খবর দিয়েছে।
ছড়িয়ে পড়া এ তেল সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য এবং ওই অঞ্চলের বাস্তুসংস্থানের জন্য তীব্র হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
পানামার পতাকাবাহী জাহাজ সানচি ইরান থেকে এক লাখ ৩৬ হাজার টন তেল নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু ৬ জানুয়ারি রাতে পূর্ব চীন সাগরের সাংহাই উপকূল থেকে ২৬৯ কিলোমিটার দূরে হংকংয়ের পণ্যবাহী একটি জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে সেটিতে আগুন ধরে যায়।
আট দিন ধরে জ্বলার পর রোববার ইরানের এ ট্যাংকারটি ডুবে যায়। তিনজনের দেহ পাওয়া গেলেও জাহাজটিতে থাকা ৩০ জন ইরানি এবং ২ জন বাংলাদেশি ক্রুর সবাই মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে ।
এর আগে উপগ্রহের ছবিতে ডুবে যাওয়া ট্যাংকারটি থেকে দুটি স্তরে তেল ছড়িয়ে পড়ার তথ্য মিলেছিল।
ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করা চীনের রাষ্ট্রীয় ওশান অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বুধবার স্তরের সংখ্যা বাড়ার কথা জানায়। এর মধ্যে সবচেয়ে ছোটটি ছড়িয়েছে ৫ দশমিক ৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা; সর্বোচ্চটি ৪৮ বর্গ কিলোমিটার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্যাংকারের বহন করা ক্রুড অয়েল এবং জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা তেল দুটোই সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়ায় সামুদ্রিক জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
সাধারণভাবে জাহাজ থেকে ছিটকে পড়া কালো রঙের গাঢ তেলের তুলনায় ট্যাংকারের বহন করা ঘনীভূত অতি-হালকা তেল বেশি বিষাক্ত; এটি সাধারণ ক্রুড অয়েলের তুলনায়ও বেশি বিস্ফোরক।
ঘনীভূত অতি-হালকা এ তেলের কোনো রঙ না থাকায় একে চিহ্নিত করা সহজ হয় না এবং এই সুযোগে এর আস্তর সমুদ্রের আরও গভীরে গিয়ে বিষ ছড়িয়ে দিতে পারে।
বুধবার চীনের যোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উদ্ধারকারী একটি দল সমুদ্রের ৩৭৭ ফুট নিচে ডুবে যাওয়া নৌযানটির সন্ধান পেয়েছে। অনুসন্ধানের জন্য পানির নিচে কাজ করতে সক্ষম এমন রোবট পাঠানোরও ঘোষণা দিয়েছে তারা।
ট্যাংকারটি যে এলাকায় ডুবেছে সেখানে একটি মেরিন পেট্রল জাহাজ পৌঁছেছে বলেও মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। জাহাজটির ক্রুরা ট্যাংকারের ফুটো চিহ্নিত করার পাশাপাশি তেলের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কাজ করবে বলেও জানিয়েছে তারা।