প্রেমের কারণে যুক্তরাজ্যে বাঙালি কিশোরকে পেটাল পাকিস্তানি পরিবার

পাকিস্তানি এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেম করায় তার পরিবারের সদস্যরা মিলে পিটিয়েছে বাঙালি এক কিশোরকে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2017, 05:16 AM
Updated : 16 Dec 2017, 05:37 AM

যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাশায়ারে গত মার্চে সংঘটিত এই ঘটনার মামলা প্রেসটন ক্রাউন কোর্টে ওঠার খবর দিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক দি সান ও ডেইলি মেইল।

আদালতে বাঙালি ওই স্কুলছাত্র তাকে নির্দয়ভাবে পেটানোর বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি জাতিগত বিদ্বেষমূলক হামলার শিকার হয়েছেন বলে তার আইনজীবীরা আদালতে তুলে ধরেছেন।

বাঙালি ওই কিশোরের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি ব্রিটিশ গণমাধ্যম। ব্ল্যাকবার্নের বাসিন্দা ওই ছাত্র বলেছেন, ওই হামলার পর থেকে এখন একা একা বাড়ি থেকে বের হতেও ভয় পান তিনি।

পাকিস্তানি কিশোরীটির বাবা ট্যাক্সিচালক মির্জা বেগ (৪৮), ভাই খিজাম বেগ (২৯), চাচা গজনফর বেগ (৩৭) এবং চাচাত ভাই সাকিব মির্জা বেগ (২৯) দোষি সাব্যস্ত হয়েছেন।

আগামী সপ্তাহে বিচারক তাদের দণ্ড ঘোষণা করবে বলে দি সান জানিয়েছে।

আদালতকে জানানো হয়, গত ৭ মার্চ বাঙালি ওই স্কুলছাত্রের সঙ্গে ভাতিজিকে দেখে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন গজনফর। তিনি প্রথমে ভাতিজিকে নিজের গাড়িতে তুলে বাসায় রেখে ফিরে এসে বাঙালি কিশোরটিকে গাড়িতে তুলে নেন।

ওই কিশোর জানায়, গাড়িতে তুলে নেওয়ার সময় তিনি বুঝতে পারেননি যে তাকে মারা হবে। কিন্তু তোলার পরই গাড়ির দরজা বন্ধ করে গজনফর ফোন করে ডেকে আনেন পরিবারের অন্য সদস্যদের, তারপর সবাই মিলে চড়াও হন তার উপর।

হামলার শিকার বাঙালি ছাত্রের আদালতে দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী গজনফর বলেছিলেন, “আমাদের রক্ত দূষিত করো না, তোমাদের মতো কাউকে বেছে নাও।”

এই আদালতেই রায় হবে বাঙালি ওই কিশোরকে হামলার মামলার

গজনফরের ডাকে আসার পর তার ছেলে কলেজছাত্র সাকিব প্রথমে ওই কিশোরের মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেন। সেখানে চাচাত বোনের ছবি দেখার পর উত্তেজিত হয়ে প্রথমে কিশোরটির নাকে ঘুষি মারেন। তারপর সবাই মিলে পেটাতে থাকেন।

হামলার সময় একজন ‘একে মেরে ফেল, মাথায় আঘাত কর, শেষ করে দাও’ বলে চ্যাঁচাচ্ছিলেন বলে বাঙালি কিশোরটি আদালতে জানিয়েছেন।

মারধরের পর একটি সেলুনের পাশে ওই কিশোরকে ফেলে রেখে যায় পাকিস্তানি ওই পরিবার। পরে স্থানীয়রা কে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।

মাথায় গুরুতর জখমের চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছাড়লেও ছেলেটি এখনও মানসিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এজন্য স্কুলের কাউন্সেলর কাজ করছেন তাকে নিয়ে।

তার এক স্কুলশিক্ষক বলেছেন, সে ছিল বেশ জনপ্রিয়, মনোযোগী ছাত্র ছিল সে। কিন্তু ওই ঘটনার পর সে পুরোপুরি বদলে গেছে।

পেটানোর কথা অস্বীকার না করলেও পাকিস্তানি ওই অভিযুক্তরা দাবি করেছেন, জাতিগত কোনো বিদ্বেষ থেকে এই ঘটনা ঘটাননি তারা।