সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোট নেপালে

শতাব্দী প্রাচীন রাজতন্ত্রের বিলুপ্তি ও মাওবাদী গেরিলাদের গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গণতন্ত্রে উত্তরণের দশককাল চেষ্টার সমাপ্তি টানতে সংসদ নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে নেপালের জনগণ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2017, 08:12 AM
Updated : 7 Dec 2017, 10:07 AM

বৃহস্পতিবার সকালে দেশটিতে সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

২৬ নভেম্বর এ নির্বাচনের প্রথম দফা ভোট গ্রহণ করা হয়েছিল । দুই দফার ভোট গণনা শেষে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

তবে ভোট গণনার জটিল পদ্ধতির জন্য ফল ঘোষণায় ১০ দিনের মতো লেগে যেতে পারে বলে দেশটির নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন।

এবারের নির্বাচনে মোট দেড় কোটি ভোটার সংসদের ২৭৫ জন সদস্যকে নির্বাচিত করবেন। এর মধ্যে ১৬৫ জন সদস্য সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন, বাকি সাংসদরা নির্বাচিত হবেন সংখ্যানুপাতিক ভোটে।

২০১৫ সালে প্রণীত গণতান্ত্রিক সংবিধান অনুযায়ী হওয়া এ ভোটে প্রথমবারের মতো নেপালিরা তাদের দেশের সাতটি প্রদেশের প্রতিনিধিও নির্বাচিত করবেন।

“নির্বাচনের পর দেশ স্থিতিশীলতা অর্জনে সক্ষম হবে, এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাবে,” এক বিবৃতিতে এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি।

নেপালের ভক্তপুরে ভোট দিচ্ছেন এক পুরুষ; ৭ ডিসেম্বর, ২০১৭। রয়টার্স

রয়টার্স বলছে, গত কয়েক বছরে অন্তত ১০ বার দেশটির সরকার পরিবর্তন হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে দেশটিতে দুর্নীতির পরিমাণও বেড়ে গেছে, আর ২০১৫ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর থেকে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাত্রা নিম্নমুখী হয়ে আছে।

এসব সংকট কাটিয়ে এবারের নির্বাচন হিমালয় কোলের দেশটিতে শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা নিয়ে আসবে, এমনটিই আশা করছেন দেশটির ভোটাররা। 

নির্বাচনে মধ্যপন্থি নেপালি কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ বামদলগুলোরে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নেপালি কংগ্রেসের এই জোটে রাজতন্ত্রপন্থিদের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের মাধেসি পার্টিও আছে।

অপরদিকে সর্বশেষ সংসদের প্রধান বিরোধীদল কমিউনিস্ট (ইউএমএল) পার্টির সঙ্গে জোট বেধেছে মাওবাদীরা। তাদের সঙ্গে আছে ছোট ছোট আরও কয়েকটি বামদল।

নেপালের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার দল নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা সুবিদিত, অন্যদিকে মাওবাদীরা চীনের কট্টর সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

দিল্লি ও বেইজিং উভয়েই নেপালের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ও ভৌগোলিক অবস্থান থেকে সুবিধা নিতে চাওয়ায় আঞ্চলিক রাজনীতিতেও এ নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশটির তিন কোটি নাগরিকের দৈনিক আয় দেড়শ টাকার নিচে। এদের অনেকেই এখনো ২০১৫ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের ক্ষতিই কাটিয়ে উঠতে পারেনি; ৮ দশমিক ১ মাত্রার ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে নয় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছিল ২০ হাজার।