দলটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই নেতার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, রোববার সকালে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখানে মুগাবে দলীয় প্রধান থাকবেন কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
ওই বৈঠকে দুই সপ্তাহ আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দলীয় পদ থেকে বরখাস্ত হওয়া নানগাওয়াকে ফিরিয়ে আনা এবং গ্রেস মুগাবেকে জানু-পিএফ উইমেন্স লীগের প্রধানের পদ থেকে সরি দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে বলে জানান ওই দুই নেতা।
এদিকে মুগাবের পদত্যাগের দাবিতে শনিবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী হারারেতে তার বাসভবনের কাছে অবস্থান নিয়েছে।
ভবনের নিরাপত্তা প্রহরীরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের সরিয়ে রাখার চেষ্টা করছে।
জানু পিএফ পার্টির উত্তরাধিকার নিয়ে শুরু হওয়া দ্বন্দ্ব এবং হঠাৎ করেই সপ্তাহ দুয়েক আগে মুগাবে ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাওয়াকে সরকার ও দল থেকে বহিষ্কারের পরই জিম্বাবুয়েতে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
নানগাওয়াকে একসময় মুগাবের উত্তরসূরী বিবেচনা করা হতো, তাকে বহিষ্কারের পর সে জায়গায় মুগাবের স্ত্রী গ্রেসের নাম চলে আসে, দলের যুব শাখায় যিনি বেশ জনপ্রিয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার মন্ত্রীদের মধ্যস্থতায় শুক্রবার সকালে গৃহবন্দি দশা থেকে বের হয়ে সাবেক গেরিলা নেতা মুগাবে জিম্বাবুয়ের ওপেন ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে উপস্থিত হন।
ওই দিন বিকালে জিম্বাবুয়ে ডিফেন্স ফোর্সের (জেডডিএফ) পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে শনিবার হারারেতে মুগাবেবিরোধী ‘সংহতি বিক্ষোভে’ অংশ নিতে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
ওই আহ্বানে সাড়া দিয়ে হাজার হাজার মানুষ মুগাবের পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করে।
মুগাবের ৩৭ বছরের শাসনের অবসানের আশায় সড়কে হাজার হাজার মানুষ নেচে, গেয়ে এবং সেনাসদস্যদের সঙ্গে কোলাকুলি করে উল্লাস করে।
ক্ষমতাসীন দলের আঞ্চলিক শাখাগুলো থেকেও মুগাবেকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়।
বিক্ষোভকারীদের একজন ৩৪ বছরের ফ্রাঙ্ক মুতসিনদিকওয়া বলেন, “এটা আনন্দ অশ্রু। আমি সারা জীবন এ দিনের জন্য অপেক্ষা করেছি। শেষ পর্যন্ত মুক্ত হলাম। আমরা শেষ পর্যন্ত মুক্ত হব।”
১৯৮০ সালে যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীন হওয়ার পর জিম্বাবুয়েতে মুগাবের শাসন শুরু হয়।
মুগাবের পতনকে জিম্বাবুয়ের অধিকাংশ নাগরিক তাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা হিসেবে দেখছে।
যদিও মুগাবের পদত্যাগের কোনো ইচ্ছা নেই বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন তার ভাতিজা প্যাটরিক ঝুওয়াও।
দক্ষিণ আফ্রিকায় গোপন অবস্থান থেকে শনিবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঝুওয়াও বলেন, “প্রেসিডেন্ট মুগাবে ও তার স্ত্রী যেটা ঠিক সেটা করার জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত আছেন। কিন্তু এই অভ্যুত্থানকে বৈধতা দিতে পদত্যাগের কোনো ইচ্ছা প্রেসিডেন্টের নেই।”
সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মুগাবে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। তবে তার ‘স্বাস্থ্য ভালো আছে’ বলেও জানান তিনি।