সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলা নিয়ে জাতিসংঘের করা একটি তদন্তের সময় এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া।
বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাবে মস্কো ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে বলে খবর বিবিসির।
সিরিয়ায় সংঘর্ষ শুরুর পর নিরাপত্তা পরিষদে দেশটির বিভিন্ন বিষয়ে আসা প্রস্তাবগুলোতে এটি রাশিয়ার দশম ভেটো।
রাশিয়ার এ অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছে ওয়াশিংটন।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেছেন, সিরিয়ায় পরবর্তী রাসায়নিক হামলা ঠেকাতে জাতিসংঘের পদক্ষেপ বাধাগ্রস্ত করলো রাশিয়ার এ ভেটো।
“কাউন্সিলের সংখ্যাগরিষ্ঠের সম্মতি থাকলেও রাশিয়া এ তদন্তের প্রক্রিয়াকে হত্যা করলো,” বলেন তিনি।
রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তদন্তের সময় বাড়াতে এর আগে রাশিয়াই একটি খসড়া প্রস্তাব দিয়েছিল, ওই প্রস্তাবে খান শেইখৌনে রাসায়নিক হামলা বিষয়ে আসাদবাহিনীর সম্পৃক্ততা নিয়ে তথ্য নতুন করে খতিয়ে দেখার প্রস্তাব এবং তদন্ত দলের সদস্য পরিবর্তনের কথা ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির মুখে মস্কোর প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি।
সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলায় কারা জড়িত তা খুঁজে দেখতে ২০১৫ সাল থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও রাসায়নিক অস্ত্রবিরোধী বিভিন্ন সংস্থা মিলে এ তদন্ত করছে। গত বছর যৌথ এ তদন্ত প্রক্রিয়ার মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাবেও সম্মতি জানিয়েছিল রাশিয়া।
এপ্রিলে খান শেইখৌনে রাসায়নিক গ্যাস হামলার জন্য তদন্ত দল আসাদকে দায়ী করার পর থেকে মস্কো এই তদন্তের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ জানিয়ে আসছে।
ওই হামলায় অন্তত ৮০ জন নিহত হয়। হামলার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে হামলাও চালায়।
আসাদ রাসায়নিক হামলার অভিযোগকে পশ্চিমাদের ‘বানানো ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছেন।
শেইখৌনে হামলা ছাড়াও সিরীয়বাহিনী ২০১৪ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত বিরোধীদের ওপর তিনবার ক্লোরিন হামলা চালিয়েছিল বলেও অভিযোগ তদন্ত দলের। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) সিরিয়ায় সালফার মাস্টার্ড গ্যাস হামলারও প্রমাণ পেয়েছে তারা।
রাশিয়াকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গৃহযুদ্ধ এবং জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসবিরোধী লড়াইয়ে আসাদবাহিনীকে সহায়তা করছে মস্কো।
জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া অভিযোগ করে বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
“নিরাপত্তা পরিষদের কিছু সদস্য আমাদের খসড়ায় সহায়তা করতে আপত্তি জানিয়েছে, তদন্ত বন্ধের সম্পূর্ণ দায়িত্ব তাদের ওপরই বর্তায়।
“তাদের মূল উদ্দেশ্য দামেস্ককে প্রশ্নবিদ্ধ করা, এজন্য তারা তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে,” বলেন নেবেনজিয়া।
জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থার যৌথ তদন্ত কার্যক্রমের মেয়াদ ৩০ দিন বাড়াতে জাপান নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব দিয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। শুক্রবার এ প্রস্তাব নিয়ে ভোট হওয়ার কথা।