জাতিসংঘে মিয়ানমারকে চীনের সমর্থন

মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তার সুরক্ষায় দেশটির সরকারকে সমর্থন দেওয়ার পাশপাশি রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর সেনাবাহিনীর নিপীড়নের অভিযোগের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে চীন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2017, 03:28 PM
Updated : 19 Sept 2017, 03:36 PM

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসকে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।

জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন বিশ্ব নেতারা।

ওয়াং সোমবার এক বৈঠকে গুতেরেসকে বলেন, “রাখাইনে নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুরক্ষায় মিয়ানমার সরকারের নেওয়া উদ্যোগ চীন বুঝতে পারছে এবং তা সমর্থন করছে। আশা করি আগুন নিয়ে এ খেলা দ্রুতই শেষ হবে।”

তাদের বৈঠকের বিষয়ে মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া শরণার্থীদের প্রতি চীন সমবেদনা জানাচ্ছে এবং তাদের জন্য ত্রাণ পাঠানো হয়েছে।

“মিয়ানমার ও বাংলাদেশকে আলোচনা ও সাংবিধানিক উপায়ে এ সংকট সমাধানের পরামর্শ দিচ্ছে চীন।”

“চীন নিজস্ব উপায়ে শান্তি আলোচনা চালিয়ে যেতেও আগ্রহী। আশা করি চলমান পরিস্থিতি শান্ত করতে আন্তর্জাতিক অঙ্গন গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে এবং আলোচনার উদ্যোগ নেবে।”

গত ২৪ অগাস্ট রাতে বিদ্রোহী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে হামলা চালায়। হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ার পর থেকে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে সেনা অভিযান শুরু হয়।

সেনাবাহিনী দেশটির সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণহত্যা, নিপীড়ন, ধর্ষণ ও তাদের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের।

জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রাখাইনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।

মিয়ানমার সরকারের দেওয়া তথ্যানুযায়ী রাখাইনে সর্বশেষ সেনা অভিযানে প্রায় চারশ’ মানুষ নিহত হয়েছে।

যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া সোমবার মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির প্রতি রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের আলোচনা সাপেক্ষে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার হবে বলে জানিয়েছেন সু চির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।

চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান।