কর্তৃপক্ষ গত সপ্তাহের ভূমিকম্পে ৩,৬০০ বাড়ি ধসে পড়ার কথা জানালেও কতগুলো মঠ ও সন্ন্যাসী আশ্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার সঠিক হিসাব এখনও প্রকাশ করেনি।
Published : 14 Jan 2025, 05:14 PM
গত ৭ জানুয়ারীর শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর তিব্বতের কমপক্ষে দুটি বৌদ্ধ মঠ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে মঠের কতজন ভিক্ষু ও সন্ন্যাসী ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়ে জখম হয়েছিলেন এবং ভূমিকম্পে নিহত শতাধিক সানুষের মধ্যে তাদের সংখ্যা সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি।
ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কয়েকটি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে। চায়না তিব্বত অনলাইন- এর প্রতিবেদনে রোববার বলা হয়, ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ডিংরি কাউন্টি থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পূর্বে একটি মঠ এবং সন্ন্যাসীদের আশ্রমের ছাদ ও দেয়াল ধ্বংস হয়েছে।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৩ হাজার ৬১৪বার কম্পন অনুভূত হয়েছে, যার মধ্যে দুটি ৪ দশমিক ৯ ও ৫ দশমিক ০ মাত্রার ছিল।
তিব্বতের বৌদ্ধ মঠ এবং আশ্রমগুলো ঐতিহ্য এবং আধ্যাত্মিক নির্দেশনার কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। কর্তৃপক্ষ ভূমিকম্পে তিন হাজার ৬০০ বাড়ি ধসে পড়ার কথা জানালেও কতগুলো মঠ ও সন্ন্যাসী আশ্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার সঠিক হিসাব এখনও প্রকাশ করেনি। এমনকি, ৭ জানুয়ারির ভূমিকম্পে নিহত ১২৬ জনের মধ্যে সন্ন্যাসী ও ভিক্ষু আছে কিনা তাও স্পষ্ট নয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জংবু মন্দিরের বেশ কয়েকজন সন্ন্যাসী ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছিলেন, পরে উদ্ধারকর্মীরা তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান। কাছের সেঙ্গার চদ মঠে রক্ষিত ঐতিহাসিক ধ্বংসাবশেষগুলো কাউন্টি কর্মকর্তাদের হেফাজতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
তিব্বত ডেইলি জানায়, তাশিলহুনপো মঠ, পানচেন লামা সালু মঠ ও পেলকর চোড়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মঠগুলোর তেমন ক্ষতি দেখতে পাননি স্থানীয় কর্মকর্তারা। সাকায়া মঠের সামান্য কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে মিডিয়ার প্রশ্নের দায়িত্বে থাকা স্টেট কাউন্সিল ইনফরমেশন অফিস (এসসিআইও) তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে তথ্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
ভারতে কেন্দ্রীয় তিব্বত প্রশাসনের নেতা পেনপা সেরিং উল্লেখ করেছেন, চীনের তথ্য সেন্সরশিপের কারণে হতাহতের সংখ্যার তথ্য যাচাই কঠিন হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তিব্বতীদের প্রয়োজন ও অধিকারগুলি বিবেচনায় নেওয়া উচিত।
সেরিং তিব্বতের অধিকার নিয়ে মন্তব্য করার পর চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা "রাজনৈতিক এজেন্ডা" বলে দাবি করেছে। সম্প্রতি কয়েক বছরে চীনে তিব্বতের মঠগুলো চীনা শাসনবিরোধীতার সাক্ষী হয়েছে। অনেক বৌদ্ধ ভিক্ষু তিব্বতের আধ্যাত্মিক গুরু দালাই লামার প্রত্যাবর্তনের দাবিতে আগুনে আত্মহুতিও দিয়েছে।
১৯৬৬-১৯৭৬ সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় তিব্বতের বেশিরভাগ ধর্মীয় কাঠামো ধ্বংস হয়ে গেলেও অনেক মঠ পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে, তবে কঠোর তত্ত্বাবধানে। তিব্বতে বর্তমানে ১,৭০০-রও বেশি বৌদ্ধ স্থান রয়েছে, যেখানে ৪৬,০০০ ভিক্ষু ও সন্ন্যাসী বাস করে।