ইউক্রেইনের রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কোম্পানি ‘এনারোঅ্যাটম’ এর প্রধান রাশিয়ার বিরুদ্ধে জেপোরোজিয়া পারমাণবিক স্থাপনাকে ঢাল হিসাবে ব্যবহরের অভিযোগ করেছেন। স্থাপনাটির সুরক্ষায় এর চারপাশে ‘অসামরিক এলাকা’ প্রতিষ্ঠার আর্জি জানিয়েছে কিইভ।
রাশিয়ার সেনারা জেপোরোজিয়াকে সামরিক ঘাঁটি বানিয়ে ফেলছে এবং ইউক্রেইনের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালানোর জন্য স্থাপনাটিকে কাজে লাগাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এনারোঅ্যাটম প্রধান পেত্রো কোটিন।
তিনি জানান, ৫শ’ রুশ সেনা ওই পারমাণবিক কমপ্লেক্সে অবস্থান নিয়েছে।স্থাপনা এলাকায় রাশিয়া রকেট লাঞ্চারও মোতায়েন করেছে। কারণ, রাশিয়া জানে- ওই এলাকায় ইউক্রেইনের কেউ কিছু করবে না। তারা নিজেদের অবকাঠামোর ক্ষতি করবে না, নিজেদের মানুষও মারবে না।
বিবিসি জানায়, জেপোরোজিয়া কমপ্লেক্স সেই মার্চের শুরু থেকে রাশিয়ার দখলে থাকলেও ইউক্রেইনের টেকিনিশিয়ানরা এখনও সেখানে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
সম্প্রতি কয়েকদিনে ওই এলাকাটি গোলা হামলার কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। ইউক্রেইন এবং রাশিয়া গোলাবর্ষণের জন্য একে অপরকে দোষারোপ করছে। ইউক্রেইন পারমাণবিক স্থাপনাটির দুই কর্মী আহত এবং তিনটি তেজস্ক্রিয় সেন্সর ক্ষতিগস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে।
এনারোঅ্যাটম প্রধান পেত্রো কোটিন বলেন, “এখন যা করা দরকারতা হল, ওই স্থাপনা থেকে দখলদ্বার বাহিনীকে সরিয়ে দেওয়া এবং সেখানে একটি অসামরিক জোন প্রতিষ্ঠা করা।”
এক বিবৃতিতে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, “বাস্তবতা হচ্ছে, ওই এলাকায় তাদের (রুশ সেনা) উপস্থিতি সামনের দিনগুলোতে সবচেয়ে বড় বিপদ হয়ে আছে। সেখানে দুর্ঘটনাক্রমে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়া এমনকী পারমাণবিক বিপর্যয়ও ঘটতে পারে।”
জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও সম্ভাব্য পারমাণবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করে সতর্ক করা হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, পারমাণবিক প্লান্টে কোনওরকম হামলা হলে তা ‘আত্মঘাতী ব্যাপার’ হবে। তিনি জেপোরোজিয়ায় পরিদর্শকদেরকে ঢুকতে দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
এর আগে শনিবার আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসিও এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ইউক্রেইনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশেপাশে সামরিক হামলার ঘটনায় তিনি ভীষণ উদ্বিগ্ন। এ হামলা ইউক্রেইনকে পারমাণবিক বিপর্যয়ের চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।