এ২৩এ হিমশৈল অ্যান্টার্কটিকা থেকে উত্তরদিকে ব্রিটিশ ভুখন্ড সাউথ জর্জিয়া এবং বন্যপ্রাণীদের অভয়ারণ্যের দিকে সরে যাচ্ছে।
Published : 24 Jan 2025, 08:25 PM
এ২৩এ নামে পরিচিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিমশৈল প্রত্যন্ত একটি ব্রিটিশ দ্বীপের সঙ্গে টক্কর খাওয়ার পথে এগুচ্ছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে পেঙ্গুইন এবং সীলরা।
গ্রেটার লন্ডনের দ্বিগুন আকৃতির এবং প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন টন ওজনের এই হিমশৈল অ্যান্টার্কটিকা থেকে উত্তরদিকে পাথুরে ব্রিটিশ ভুখন্ড সাউথ জর্জিয়া এবং বন্যপ্রাণীদের অভয়ারণ্যের দিকে সরে যাচ্ছে।
সেখানে এই হিমশৈল ধাক্কা খেয়ে টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়তে পারে। হিমশৈলটি এ মুহূর্তে ১৭৩ মাইল দূরে আছে (২৮০ কিলোমিটার)। বিশাল আকারের এ২৩এ হিমশৈল সাউথ জর্জিয়াতে চলে গেলে বণ্যপ্রাণীদের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
কারণ, অসংখ্য সিল, পেঙ্গুইন ও সামুদ্রিক পাখির খাবার আসে চারপাশের পানি থেকে। অতীতেও এম বিশালাকার হিমশৈলের কারণে সাউথ জর্জিয়ায় বহু পাখি এবং সিলের মৃত্যু হয়েছে।
২০০৪ সালে এ৩৮ নামের একটি হিমশৈল দ্বীপটির তলদেশে আটকে গেলে সৈকতে অনেক পেঙ্গুইন ও সিলের ছানা মারা গিয়েছিল খেতে না পেয়ে। দ্বীপটি কিং পেঙ্গুইন, লাখ লাখ হাতি এবং পশম সিলের রাজ্য।
দক্ষিণ জর্জিয়ার সরকারি জাহাজ ফারোস থেকে সমুদ্রের ক্যাপ্টেন সাইমন ওয়ালেস বিবিসি-কে বলেন, “আইসবার্গ বেশ বিপজ্জনক। আমি খুবই খুশি হব যদি এটি আমাদের পাশ কাটিয়ে চলে যায়।”
বিশ্বজুড়ে একদল বিজ্ঞানী, নাবিক ও জেলে উদ্বিগ্নভাবে স্যাটেলাইট ছবি পরীক্ষা করে হিমশৈলের এই রানির দৈনন্দিন গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন।
পৃথিবীর বৃহত্তম এই বরফখন্ড ১৯৮৬ সালে অ্যান্টার্কটিক উপকূলরেখা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। এরপর দ্রুত সরে গিয়ে ওয়েডেল সাগরের মাঝে আটকে বরফ দ্বীপে পরিণত হয়।
সমতল ও চারাপাশে খাড়া ঢাল আকৃতির এই হিমশৈলের তলা ওয়েডেল সাগরের তলদেশের সঙ্গে শক্তভাবে লেগে থাকার কারণে সেটি সরে যায়নি।
কিন্তু এতদিন সরে না গেলেও প্রায় ৪০ বছর পর এটি আবার নড়াচড়া শুরু করে। আটকে থাকা অবস্থা থেকে হিমশৈলটি ডিসেম্বরে মুক্ত হয়ে এখন দ্রুতই সরে যাচ্ছে।
এক সময় হিমশৈলটির আয়তন ছিল ৩ হাজার ৯০০ বর্গকিলোমিটার, কিন্তু সর্বশেষ স্যাটেলাইট ছবি অনুযায়ী বিশ্লেষকদের অনুমান, এটি ধীরে ধীরে ক্ষয় হচ্ছে।
এটি এখন প্রায় ৩ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার। ইংরেজ কাউন্টি কর্নওয়ালের সমান। হিমশৈলটির বড় বড় বরফের চাঁই ভেঙে পড়ছে। এভাবে এ২৩এ যে কোনও দিনই বড় বড় অংশে টুকরো হয়ে ভেঙে পড়তে পারে।
তারপর বছরের পর বছর ধরে এই বরফের চাঁইগুলো এলোমেলোভাবে সাউথ জর্জিয়ার চারপাশে ভাসমান এক একটি নগরীর মতো ভেসে বেড়াতে পারে।