ভারতে প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভ মেলায় গঙ্গায় পুন্যস্নান করেছেন ৫০ কোটির বেশি মানুষ। তবে সরকারি রিপোর্ট বলছে, নদীর পানি স্নানের যোগ্য নয়।
Published : 18 Feb 2025, 07:55 PM
ভারতে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলা চলছে সেই ১৩ জানুয়ারি থেকে। ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই মেলা। পূণ্য অর্জন করতে এরই মধ্যে গঙ্গাস্নান করেছেন ৫০ কোটিরও বেশি মানুষ। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, গঙ্গার পানি স্নানের যোগ্য নয়। তা মানুষের মলমূত্রে থাকা জীবাণুতে ভরতি।
কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের (সিপিসিবি) রিপোর্ট বলছে, প্রয়াগরাজের বহু জায়গায় গঙ্গা নদীর পানিতে উচ্চমাত্রায় ফেকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি মহাকুম্ভে গঙ্গার পানিতে দূষণের এই রিপোর্ট পেশ করা হয়।
এতে বলা হয়েছে, মহাকুম্ভে মানুষ বিশেষ করে যেসব পুণ্যদিনে অমৃত স্নান করেছেন, সেই সব দিনে সবচেয়ে বেশি ব্যাক্টেরিয়া বেড়েছে সঙ্গমের পানিতে। তবে কেবল প্রয়াগ সঙ্গমেই নয়, সেখানকার কোনও ঘাটেরই পানি স্নান করার উপযুক্ত নয় বলে জানানো হয় রিপোটে।
এতে আরও জানানো হয়, গত ১২ ও ১৩ জানুয়ারিতে মহাকুম্ভের নদীর পানি পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাতে দেখা যায়, বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিম্যান্ড (বিওডি)-এর নিরিখে ওই পানি স্নানের অনুপযুক্ত। পাশাপাশি ফেকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার মাত্রাও পানিতে অনেক বেশি। এই জীবাণু মানুষ এবং পশুর মলমূত্রে থাকে।
পানি দূষিত হচ্ছে কিনা তা বোঝা যায় পানিতে ফেকাল কলিফর্ম ব্যাটরেরিয়ার উপস্থিতি খতিয়ে দেখে। সিপিসিবি-এর হিসাবমতে, ১০০ মিলিমিটার পানিতে সর্বোচ্চ ২,৫০০ ফেকাল কলিফর্ম ব্যাটরেরিয়া থাকতে পারে। যদি তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া দেখা যায়, তাহলে সেই পানি স্নানের অনুপযোগী।
মহাকুম্ভে গঙ্গার পানিতে ঠিক কী পরিমাণ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে তা অবশ্য জানানো হয়নি রিপোর্টে। এতে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, শাহি স্নানের দিনগুলোতে পুণ্যার্থীদের ভিড়ের কারণে পানিতে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। মেলা শেষের দিন ২৬ ফেব্রুয়ারির শিবরাত্রিতে শেষ হবে শাহি স্নান।
কেন্দ্রের এমন রিপোর্টের ভিত্তিতে উত্তরপ্রদেশ সরকারের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে তলব করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। বুধবার ভার্চুয়ালি হাজিরা দিতে বলা হয়েছে এই দপ্তরের কর্মকর্তাদেরকে।
নদীতে দূষণের মাত্রা কমাতে উত্তর প্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা জানতে চায় পরিবেশ আদালত।