ওয়াশিংটনে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ বৈঠকে আবদুল্লাহ গাজা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ প্রতিহত করতে পারবেন কিনা সেটিই প্রশ্ন।
Published : 11 Feb 2025, 10:05 PM
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সদ্যই হুঁশিয়ার করে বলেছেন, তার পরিকল্পনামতো জর্ডান গাজার ফিলিস্তিনিদের শরণার্থী হিসাবে না নিলে তিনি দেশটিতে সহায়তা বন্ধ করে দিতে পারেন।
এই হুঁশিয়ারির মধ্যেই মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন ট্রাম্প। তার গাজার ফিলিস্তিনিদের সরানোর পরিকল্পনা জর্ডানসহ অন্যান্য আরব দেশের নেতারাও প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আর সংঘাতে ঘেরা এবং শরণার্থীর বোঝায় জর্জরিত ছোট্ট দেশ জর্ডান গোলযোগপূর্ণ মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে স্থিতিশীলতার সুপারপাওয়ার হয়েও এখন খোদ মিত্রদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের মুখে পড়েছে।
দেশটিতে গত সপ্তাহে ট্রাম্পের গাজাবাসীদের পুনর্বাসন পরিকল্পনার বিরুদ্ধে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছে। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে ফিলিস্তিনের ভূমি ইসরায়েলের কট্টর-জাতীয়তাবাদীদের দখলে নিতে ইসরায়েলের জন্য সহায়ক হিসাবেই দেখছে তারা।
জর্ডানে ইতোমধ্যেই আছে ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি শরণার্থী। সেখানকার শরণার্থী শিবিরে থাকা কিছু শরণার্থী ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর গাজা থেকে সেখানে গিয়ে সাময়িক আশ্রয় পাওয়ার চেষ্টায় আছে। কয়েক প্রজন্ম ধরে এখনও তারা সেখানে রয়েছে।
ফলে এই মুহূর্তে জর্ডান সরকারকে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং ফিলিস্তিনের সঙ্গে জর্ডানবাসীদের সম্পর্কের কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।
এমন একটি আবহেই হতে চলেছে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক। এ বৈঠকে আবদুল্লাহ গাজা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ প্রতিহত করতে পারবেন কিনা সেটিই প্রশ্ন।
আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠকের আগে দিয়েই ট্রাম্প গাজা প্রশ্নে জর্ডানের ওপর চাপ বাড়িয়েছেন দেশটিতে সাহায্য বণ্ধের কথা বলে। জর্ডানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক সহায়তা পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। দেশটি ২০২৩ সালে ১০০ কোটিরও বেশি ডলারের মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা পেয়েছে।
কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার ফিলিস্তিদিরকে শরণার্থী হিসাবে নেওয়া জর্ডানের জন্য রাজনৈতিক দিক থেকে লাভজনক কিছু হবে না। ট্রাম্পের পরিকল্পনা জর্ডান মেনে নিলে দেশটিতে অভ্যন্তরীন অস্থিতিশীলতা দেখা দেবে এবং রাজতন্ত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
সেক্ষেত্রে এক বিশ্লেষকের মতে, জর্ডানের বাদশাহ হয়ত ট্রাম্পকে এই বার্তা দিতে পারেন যে তার বিপর্যয়কর পরিকল্পনা জর্ডানকে ধ্বংস করে দেবে।
অন্যান্য বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের চাপের কারণে জর্ডান ও অন্যান্য আঞ্চলিক মিত্রদেশগুলো হয়ত নতুন অংশীদারের খোঁজ শুরু করতে পারে। জর্ডান, মিশর ও অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলো হয়ত তখন রাশিয়া ও চীনের দিকে তাকাতে পারে।