উত্তর কোরিয়ার ‘নির্মম স্বৈরশাসন’, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নিন্দায় হ্যারিস

দক্ষিণ কোরিয়া সফরে গিয়ে আন্তঃকোরীয় সীমান্ত পরিদর্শনকালে উত্তর কোরিয়ার এই নিন্দা করেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

রয়টার্সবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2022, 11:30 AM
Updated : 29 Sept 2022, 11:30 AM

উত্তর কোরিয়া পূর্ব উপকূলে দুটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর পরপরই দক্ষিণ কোরিয়ায় সফরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।

দুই কোরিয়াকে বিভক্তকারী অসামরিক এলাকা পরিদর্শন করেছেন তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে পৌঁছার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক-ইয়োলের সঙ্গেও হ্যারিস সাক্ষাৎ করেছেন। উত্তর কোরিয়ার কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছেন দু’নেতাই।

হ্যারিস বৃহস্পতিবার আন্তঃকোরীয় সীমান্ত পরিদর্শনকালে উত্তর কোরিয়ার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, “উত্তর কোরিয়া নির্মম স্বৈরশাসন, অবৈধ অস্ত্র কর্মসূচি এবং বেপরোয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের দেশ।”

দুই কোরিয়াকে বিভক্তকারী অসামরিক এলাকা (ডিএমজে) প্রথমবারের মতো পরিদর্শন করে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস বলেন, “ভারি অস্ত্রে সজ্জিত এই সীমান্ত এলাকাই দুই অংশের ‘নাটকীয়ভাবে আলাদা পথ’ বেছে নেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।”

“উত্তরে আমরা দেখছি নির্মম স্বৈরশাসন, ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অবৈধ অস্ত্র কর্মসূচি, যে কর্মসূচি শান্তি ও স্থিতিশীলতায় হুমকি সৃষ্টি করেছে।”

“যুক্তরাষ্ট্র এবং এই বিশ্ব একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ কোরিয়া উপদ্বীপ চায়। যেখানে ডিপিআরকে (উত্তর কোরিয়া) আর হুমকি হয়ে বিরাজ করবে না।”

উত্তর কোরিয়ার নিন্দা করার পাশাপাশি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস দক্ষিণ কোরিয়াকে সুরক্ষা দিয়ে যাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং দুইদেশের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন।

উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া এবং তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের তৎপরতা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ কোরিয়ায় সফরে গেছেন হ্যারিস। উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে এমন আশঙ্কার মধ্যেই হ্যারিস এ সফর করছেন।

হ্যারিস এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট সুক-ইয়োল দুইজনই বৈঠককালে উত্তর কোরিয়ার বাড়াবাড়িরকমের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এবং হুমকি সৃষ্টির নিন্দা করেছেন।

হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “কমলা হ্যারিস এবং সুক-ইয়োল উত্তর কোরিয়ার উস্কানির নিন্দা করার পাশাপাশি ভবিষতে এমন উস্কানির জবাব ত্রীপক্ষীয়ভাবে দেওয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন, যেটি করা হবে জাপানের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে।”

কোরিয়া উপদ্বীপ পুরোপুরি নিরস্ত্র করার অভিন্ন লক্ষ্য নিয়েও হ্যারিস এবং ইয়োল আলোচনা করেছেন।

উত্তর কোরিয়া এবং ‍যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা বহুবছর ধরেই বন্ধ হয়ে আছে। উত্তর কোরিয়া একের পর এক অস্ত্র উন্নয়ন করেই চলেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র এর পাল্টা ব্যবস্থায় নিজেদের প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করে চলেছে।

এবছর উত্তর কোরিয়া এপর্যন্ত ৩০ টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। অন্য যে কোনও বছরের চেয়ে এ সংখ্যা বেশি।সর্বশেষ হ্যারিসের দক্ষিণ কোরিয়া সফরের আগের দিন বুধবার ১০ মিনিটের ব্যবধানে উত্তর কোরিয়ার দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কথা জানিয়েছিল সিউল।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ এক বিবৃতিতে বলেছে, “উত্তর কোরিয়া উস্কানি দিতে থাকলে তাতে কেবল দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের সম্মিলিত প্রতিরক্ষা ও পাল্টা জবাব দেওয়ার সক্ষমতা আরও জোরদার হতে থাকবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে উত্তর কোরিয়ার বিচ্ছিন্নতা আরও গভীর হতে থাকবে।”