বেলুচিস্তানের গোয়াদর থেকে করাচিগামী বাস থামিয়ে যাত্রীদের পরিচয়পত্র যাচাইয়ের পর তাদেরকে হত্যা করা হয়। নিহতরা সবাই পাঞ্জাবের মানুষ।
Published : 27 Mar 2025, 07:48 PM
পাকিস্তানে বেলুচিস্তানের বোলান পর্বতে কিছুদিন আগেই ট্রেনে হামলা এবং জিম্মি ঘটনার পর আবার ঘটল হামলার ঘটনা। এবার বেলুচিস্তানের গোয়াদর জেলার পানসি শহরের কাছে বাস থেকে নামিয়ে হত্যা করা হল নিরীহ যাত্রীদের।
অস্ত্রধারীরা যাত্রীবাহী বাস থামিয়ে অন্তত পাঁচজনকে হত্যা করেছে। তারা সবাই পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন।
বুধবার গোয়াদর থেকে করাচিগামী বাস থামিয়ে তাদের পরিচয়পত্র যাচাইয়ের পর গাড়ি থেকে নামিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের এক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা।
বেলুচিস্তানে পাঞ্জাবের বাসিন্দাদের নিশানা করে হামলা এটিই প্রথম নয়। আফগানিস্তান ও ইরানের সঙ্গে সীমান্তবর্তী বেলুচিস্তান অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিদ্রোহ চলে আসছে।
বেলুচ জাতীয়তাবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান সরকার ও দেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ পাঞ্জাব প্রদেশের বিরুদ্ধে বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদের মুনাফা একচেটিয়াভাবে ভোগ করার অভিযোগ করে আসছে, তাদের দাবি এতে তারা রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা ও অর্থনৈতিকভাবে শোষিত হচ্ছে।
তবে ইসলামাবাদ এসব অভিযোগ নাকচ করে বলছে, বেলুচিস্তানের উন্নয়নে নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
বেলুচিস্তানের পাসনি শহরের সহকারী কমিশনার মোহিম খান আরব নিউজ-কে জানান, বুধবার “সশস্ত্র হামলাকারীরা পানসির কালমাত এলাকার উপকূলীয় মহাসড়কে বাস থামিয়ে ৬ জন যাত্রীর পরিচয়পত্র যাচাইয়ের পর জোর করে গাড়ি থেকে নামায়।”
“হত্যার ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ৫ জনের মৃত্যু হয়। বাকি আরেকজন গুরুতর জখম হন” বলে জানান তিনি। হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার আগে একটি ট্রলার ও একটি গাড়িতেও আগুন দেয়।
বাসযাত্রীদের হত্যার ঘটনার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি, তবে সন্দেহের তীর নিষিদ্ধ ঘোষিত বেলুচ লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) দিকেই। এর আগে গোষ্ঠীটি বেলুচিস্তানের বিভিন্ন মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস থামিয়ে একই ধরনের হামলা চালিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে বারখান জেলায় পাঞ্জাবগামী বাস থামিয়ে সাতজনকে হত্যা করেছিল এ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এক বিবৃতিতে বাসে হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “উন্নয়ন ও শান্তির শত্রুরা বেলুচিস্তানে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়। নিরীহ মানুষদের ওপর কাপুরুষোচিত হামলা তাদের বর্বরতার পরিচায়ক।”
নিরাপত্তা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো দেশবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী হামলার ঘটনার তদন্ত করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন।