রাশিয়ার সামরিক ব্লগাররা জানিয়েছেন, তাদের দেশের কুর্স্ক অঞ্চলের প্রায় ২০ কিলোমিটার ভেতরে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই চলছে।
Published : 11 Aug 2024, 12:45 PM
রাশিয়ার কুর্স্কে ইউক্রেইনীয় বাহিনী বিস্ময়কর আক্রমণ শুরু করার পর সেখানে লড়াই করছে বলে প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার ভূখণ্ডে এটাই কিইভের সবচেয়ে বড় অনুপ্রবেশের ঘটনা। অনুপ্রবেশকারী ইউক্রেইনীয় বাহিনীর সঙ্গে শনিবার ষষ্ঠ দিনের মতো তীব্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল রাশিয়ার বাহিনী। ইউক্রেইনীয় বাহিনীর হঠাৎ আক্রমণে রাশিয়ার দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় অংশ অরক্ষিত হয়ে পড়েছিল, পরে অতিরিক্ত বাহিনী এসে আক্রমণকারী বাহিনীকে বাধা দেয়।
রয়টার্স জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে শনিবার নিজেদের তিনটি সীমান্ত অঞ্চলে জরুরি নিরাপত্তা অবস্থা জারি করে রাশিয়া। একই সময় রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশ কিইভের বিরুদ্ধে আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ইউক্রেইন সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে।
শনিববার নিজের রাত্রিকালীয় ভিডিও বক্তৃতায় জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেইনের কমান্ডার অলেকজান্দার সুরস্কির সঙ্গে অভিযানটি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন তিনি।
জেলেনস্কি বলেন, “আজ আমি কমান্ডার জেলেনস্কির কাছ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রের বিষয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন পেয়েছি। আমাদের পদক্ষেপের উদ্দেশ্য যুদ্ধকে আগ্রাসীর ভূখণ্ডে ঠেলে দেওয়া। ইউক্রেইন প্রমাণ করেছে যে প্রকৃতপক্ষে তারা ন্যায়বিচার পুনরুদ্ধার করতে পারে এবং হামলাকারীর ওপর প্রয়োজনীয় চাপ নিশ্চিত করতে পারে।”
পশ্চিমা সামরিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, ইউক্রেইনের এই আক্রমণে ক্রেমলিন অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই আক্রমণকে বড় ধরনের উস্কানি বলে অভিহিত করেছেন।
রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ বুধবার জানান, আক্রমণ থামিয়ে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু ইউক্রেইনীয় বাহিনীকে ফের সীমান্তের অপর পারে ঠেলে দেওয়া যায়নি।
রাশিয়ার সামরিক ব্লগাররা জানিয়েছেন, রাশিয়ার অতিরিক্ত বাহিনী আসার পর পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়। তবে ইউক্রেইন দ্রুততার সঙ্গে বাহিনী গড়ে তুলতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন তারা।
রোববার ভোররাতে কুর্স্কের কর্মকর্তারা জানান, ইউক্রেইনের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করার পর সেটির ধ্বংসাবশেষ নয়তলা একটি ভবনের ওপরে পড়ে ১৩ জন আহত হয়েছেন।
কুর্স্কের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর অ্যালেক্সি স্মিরনভ স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে ঝুঁকিতে থাকা এলাকাগুলো থেকে বেসামরিকদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
শনিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, এরইমধ্যে ওই অঞ্চলগুলো থেকে ৭৬ হাজার জনেরও বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার সামরিক ব্লগাররা জানিয়েছেন, কুর্স্ক অঞ্চলের প্রায় ২০ কিলোমিটার ভেতরে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই চলছে।
ইউক্রেইন কীভাবে এতো সহজে কুর্স্ক অঞ্চলের ভেতরে ঢুকে পড়ল এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এই ব্লগারদের কেউ কেউ।