ট্রাম্পকে ইসরায়েল সবচেয়ে ভাল বন্ধু বললেও যুদ্ধসহ আরও কিছু বিষয়ে তার ভিন্ন অবস্থানের কারণে নেতানিয়াহু সব চাওয়ায় হালে পানি নাও পেতে পারেন।
Published : 08 Nov 2024, 11:56 PM
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ট্রাম্প জয় ঘোষণার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুই সবার আগে তাকে টুইটে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রত্যাবর্তন’ বলে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন।
নেতানিয়াহু এর আগে ট্রাম্পকে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভাল বন্ধু বলেও মন্তব্য করেছিলেন। ট্রাম্পও তার আগের মেয়াদে ইসরায়েলের অনুকূলে কিছু কাজ করে দেশটির পছন্দের পাত্র হয়ে উঠেছিলেন।
ইসরায়েলের বিরোধিতা করে আসা ‘ইরান পারমাণবিক চুক্তি’ ট্রাম্প বাতিল করেছিলেন। কয়েকটি আরব দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে তিনি ঐতিহাসিক উদ্যোগ নিয়েছিলেন। জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সাবেক ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত মাইকেল ওরেন বলেন, “ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্সির মেয়াদ ‘আদর্শ’ছিল। আবারও সেটি হওয়ার আশা আছে। কিন্তু ডনাল্ড ট্রাম্প কে এবং তার অবস্থান কি সে বিষয়টি নিয়ে আমাদেরকে খুব স্পষ্টভাবেই চিন্তা করতে হবে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু যা চাইবেন, তাই যে ট্রাম্প দেবেন সেরকম কোনও নিশ্চয়তা নেই। মাইকেল ওরেনের মতে, এর কারণ প্রথমত: সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ পছন্দ করেন না। যুদ্ধকে ব্যয়বহুল হিসাবেই দেখেন তিনি। গাজায় ইসরায়েলকে জলদি যুদ্ধ শেষ করার আহ্বানও ট্রাম্প জানিয়েছেন।
তাছাড়া, ট্রাম্প অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের ইহুদি বসতি বাড়ানোরও পক্ষে নন। পশ্চিম তীরের কিছু অংশ ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করে নিতে কিছু ইসরায়েলি কর্মকর্তার ইচ্ছারও বিরোধী তিনি।
ট্রাম্প এই নীতিতে অটল থাকলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তার বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারে কট্টর-ডান দলগুলোর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারেন।
এই কট্টর-ডান দলগুলো তাদের পছন্দের নীতির বাইরে নেতানিয়াহু কিছু করলে সরকারের পতন ঘটানোর হুমকি দিয়ে রেখেছে।
নেতানিয়াহুকে ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের দাবি এবং তার নিজ জোট সরকারের শরিকদের দাবির মধ্যে কোনও একটিকে বেছে নিতে বলা হলে নেতানিয়াহু সাধারণত তার জোট সরকারকেই বেছে নেন।
এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত একলাফে অনেক বেড়েছে। এবার ভাবি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে ইসরায়েলকে একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ নিয়েই চলতে হবে বলে মনে করেন ওরেন।
তিনি বলেন, “জানুয়ারিতে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নিয়েই যদি বলেন, “আপনাকে (নেতানিয়াহু) যুদ্ধ শেষ করতে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হল, তাহলে নেতানিয়াহুকে সেই কথাকে সম্মান দেখাতে হবে।”
কিছু ফিলিস্তিনিও মনে করে- ট্রাম্পের কঠোর কিছু প্রতিশ্রুতি আছে। তিনি শক্ত মানুষ। সেদিক থেকে তিনি শান্তি ফেরাতে সহায়তা করতে পারেন।