সিঙ্গাপুর ছেড়ে এবার ‘থাইল্যান্ডে যাচ্ছেন’ গোটাবায়া রাজাপাকসে

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতেও তিনি সাময়িক আশ্রয় চাইবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2022, 08:13 AM
Updated : 10 August 2022, 08:13 AM

শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে সিঙ্গাপুর ছেড়ে এবার থাইল্যান্ড যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে দুটি সূত্র।

গোটাবায়া বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ড নামবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে; সিঙ্গাপুরের মতো দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতেও তিনি সাময়িক আশ্রয় চাইবেন, বলেছে সূত্রদুটি।

স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকট দেখা শ্রীলঙ্কানদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে তিনি গত মাসে দ্বীপদেশটি থেকে পালিয়ে যান।

হাজার হাজার বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও দপ্তরে ঢুকে পড়ার কয়েকদিন পর গোটাবায়ার মালদ্বীপ হয়ে শ্রীলঙ্কায় পৌঁছানোর খবর আসে।

অবসরপ্রাপ্ত এ সামরিক কর্মকর্তা পরে প্রেসিডেন্ট পদও ছেড়ে দেন; যা তাকে শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে মেয়াদের মাঝপথে পদত্যাগ করা প্রথম প্রেসিডেন্ট বানিয়ে দিয়েছে।

সাবেক এই লঙ্কান প্রেসিডেন্ট সিঙ্গাপুর ছাড়ার পর বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক নামবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে, বলেছে সূত্রদুটি।

এ প্রসঙ্গে রয়টার্স শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পায়নি। আর থাই সরকারের মুখপাত্র রাতচাদা থানাদিরেক বলেছেন, “কোনো মন্তব্য নেই।”

শ্রীলঙ্কা ছাড়ার পর থেকে এ পর্যন্ত গোটাবায়াকে জনসমক্ষে আসতে বা কিছু বলতে শোনা যায়নি।

চলতি মাসে সিঙ্গাপুরের সরকার বলেছে, নগররাষ্ট্রটির পক্ষ থেকে সাবেক লঙ্কান প্রেসিডেন্টকে কোনো বিশেষ সুযোগ সুবিধা বা দায়মুক্তি দেওয়া হয়নি।

প্রভাবশালী রাজাপাকসে পরিবারের ৭৩ বছর বয়সী এক সময় শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা এবং পরে প্রতিরক্ষা সচিবেরও দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি প্রতিরক্ষা সচিব থাকার সময়, ২০০৯ সালে সরকারি বাহিনী চূড়ান্তভাবে তামিল টাইগার বিদ্রোহীদের পরাজিত করে, ইতি টানে শ্রীলঙ্কার কয়েক দশকের গৃহযুদ্ধের।

সেসময় গোটাবায়া রাজাপাকসে যুদ্ধাপরাধ করেছিলেন বলে যেসব অভিযোগ আছে, সেসব তদন্ত করে দেখতে অনেক মানবাধিকার সংগঠন দাবি জানিয়ে এলেও মাহিন্দার এই ছোটভাই শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

অনেক সমালোচক এবং আন্দোলনকারীরা দ্বীপদেশটির বর্তমান অর্থনৈতিক দুর্দশার জন্যও রাজাপাকসে পরিবার, বিশেষ করে দুই ভাই মাহিন্দা ও গোটাবায়া রাজাপাকসেকেই দায়ী করছেন।

গোটাবায়ার ভাই মাহিন্দাও শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের ছোট ভাই বাসিল রাজাপাকসে এ বছরের শুরুর দিকেও দ্বীপদেশটির অর্থমন্ত্রী ছিলেন।

নিকট ভবিষ্যতে শ্রীলঙ্কায় ফেরার চিন্তা সাবেক প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ার বাদ দেওয়াই উচিত হবে বলে কিছুদিন আগেই দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল মন্তব্য করেছিলেন।

“আমার মনে হয় না, এটা তার ফেরার উপযুক্ত সময়। তিনি শিগগিরই ফিরছেন এমন কোনো ইঙ্গিতও পাইনি,” গত ৩১ জুলাই ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেন রনিল।

রাজাপাকসে শ্রীলঙ্কায় ফিরলে এবং তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের হলে কোনো আইনই সম্ভবত তাকে রক্ষা করতে পারবে না, বলেছেন দ্বীপদেশটির আইন বিশেষজ্ঞরা।