পার্লামেন্টে এক ভোটাভুটিতে থাকসিনের রাজনৈতিক মিত্র, পুয়ে থাই দলের স্রেথা থাভাইসিন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন।
Published : 23 Aug 2023, 12:01 PM
থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা অসুস্থবোধ করায় রাতেই তাকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সাজা এড়াতে প্রায় ১৫ বছর স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকার পর মঙ্গলবার দেশে ফেরেন থাকসিন। ব্যক্তিগত বিমানে করে ব্যাংককের ডন মুয়াং বিমানবন্দরে এসে নামার কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রেপ্তার হন তিনি। পুলিশ সরাসরি তাকে থাইল্যান্ডে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে হাজির করে।
সুপ্রিম কোর্ট বিভিন্ন অভিযোগ তাকে আট বছরের কারাদণ্ড দেয়। আদালত থেকে তাকে সোজা ব্যাংককের রিমান্ড কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। কারাগারে প্রথম রাতেই বুকে চাপ অনুভব করার পর উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, থাইল্যান্ডের পপুলিস্ট রাজনৈতিক শক্তি পুয়ে থাইয়ের প্রতিষ্ঠাতা, ধনকুবের থাকসিনের (৭৪) সর্বশেষ অবস্থা কী বুধবার সকালে তা পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি। মন্তব্যের জন্য জানানো অনুরোধে তার প্রতিনিধিরা তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি।
থাইল্যান্ডের সংশোধন বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, থাকসিন বুকে চাপ অনুভব করার পর তার উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত হলে বুধবার দুপুররাত ২টার দিকে তাকে ব্যাংককের পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মঙ্গলবার পার্লামেন্টে এক ভোটাভুটিতে থাকসিনের রাজনৈতিক মিত্র, পুয়ে থাই দলের স্রেথা থাভাইসিন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু থাকসিনের দেশে ফেরা ও বিমানবন্দর থেকে তাকে পাহারা দিয়ে আদালত ও কারাগারে নিয়ে যাওয়ার নাটকীয়তায় দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বিষয়টি প্রায় আড়ালে চলে যায়।
বুধবার থাই পার্লামেন্টের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাজকীয় অনুমোদন পাওয়ায় পুয়ে থাই পার্টির স্রেথার প্রধানমন্ত্রীত্ব নিশ্চিত হয়ে গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কারাগারে থাকসিন সঠিক চিকিৎসা পাবেন, কারা কর্তৃপক্ষ এমন নিশ্চয়তা দিতে না পারায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংশোধন বিভাগের মহাপরিচালক আয়ুথ সিনটোপ্যান রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রাতে থাকসিনকে যখন হাসপাতালে পাঠানো হয় তখন আটজন কারারক্ষী তার সঙ্গে ছিলেন।
থাকসিন দেশে ফিরে ব্যাংককের প্রধান বিমানবন্দরে নামার পর সেখানে অপেক্ষমাণ পুয়ে থাইয়ের নির্বাচিত আইনপ্রণেতা ও উপস্থিত শত শত উৎফুল্ল সমর্থক তাকে স্বাগত জানান। থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় এই রাজনীতিকের আগমণের খবরে গণমাধ্যম সয়লাব হয়ে যায়।
তবে থাকসিনের দেশে ফিরে আসা আর সেইদিনই তার দলের নেতা স্রেথার কোনো বিঘ্ন ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার মধ্যে কোনো একটা বিষয় আছে বলে অনেকের ধারণা। তারা মনে করছেন, প্রভাবশালী থাকসিন সামরিক বাহিনীর মধ্যে থাকা তার বিরোধীদের ও রাজনৈতিক অভিজাতদের সঙ্গে সম্ভবত নির্বিঘ্নে দেশে ফেরা ও আশু কারামুক্তির বিষয়ে একটি চুক্তি করেই দেশে ফিরেছেন। কিন্তু থাকসিন ও তার দল পুয়ে থাই এ ধরনের কোনো চুক্তি হওয়ার কথা অস্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন:
থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন ১৫ বছর পর দেশে ফিরেছেন
নির্বাসন থেকে ফিরে জেলে গেলেন সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী সিনাওয়াত্রা