থাকসিনের রাজনৈতিক মিত্ররা যখন তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিদের সঙ্গে মিলে একটি সরকার গঠনের চেষ্টায় নামছে তখনই তিনি দেশে ফিরলেন।
Published : 22 Aug 2023, 10:32 AM
থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা স্বেচ্ছা নির্বাসনে ১৫ বছর বিদেশে থাকার পর দেশে ফিরেছেন।
মঙ্গলবার সকালে সিঙ্গাপুর থেকে একটি ব্যক্তিগত বিমানে করে তিনি দেশে ফেরেন, খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের।
থাইল্যান্ডের খাওসোদ মিডিয়া ও থাই পিবিএস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৯টার একটু আগে থাকসিনকে বহনকারী বিমান ব্যাংককের ডন মুয়াং বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এর আগে তার বোন, থাইল্যান্ডের আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা টিকটকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন, তাতে ঘন নীল স্যুট ও লাল টাই পরা থাকসিনকে ছোট একটি বিমানের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে দেখা যায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা ইংলাকের আরেকটি পোস্টে দেওয়া ছবিতে থাকসিনকে সিঙ্গাপুরে তার ব্যক্তিগত বিমানের ভেতরে বসে থাকতে দেখা যায়। এই পোস্টে ইংলাক বলেন, “যে দিনটির জন্য আমার ভাই অপেক্ষা করছিল তা এসেছে।”
নিজেও স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা ইংলাক বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে তুমি নিঃসঙ্গ বোধ করেছো, একাকী, অস্থির আর দেশকে মিস করেছো কিন্তু তুমি ধৈর্য্যশীল ছিলে।”
থাকসিনের রাজনৈতিক মিত্ররা যখন তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বিদের সঙ্গে মিলে একটি সরকার গঠনের চেষ্টায় নামছে তখনই তিনি দেশে ফিরলেন।
তিনি থাইল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনের দ্বিতীয় স্থান পাওয়া পুয়ে থাই পার্টির নির্বাসনে থাকা নেতা। অনেকের মতে থাকসিন (৭৪) থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বিখ্যাত রাজনীতিক।
ডন মুয়াং বিমানবন্দরে নামার পর কিছুক্ষণের জন্য তাকে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা যায়। এ সময় তিনি পুয়ে থাইয়ের নির্বাচিত আইনপ্রণেতা ও উপস্থিত শত শত উৎফুল্ল সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। এরপর আবার বিমানবন্দরের টার্মিনালের ভেতরে চলে যান, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
দেশে এসে নামলেই তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে এবং তিনি ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হতে পারেন, এমন সব খবর সত্ত্বেও তার আগমণের কথা ঘোষণার পর থাকসিনের হাজার হাজার লাল জামা পরা সমর্থক নেচে, গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন।
২০০১ সালে থাইল্যান্ডের ক্ষমতায় এসেছিলেন থাকসিন। দেশটির অভিজাত শাসকদের অবহেলার শিকার গ্রামীণ ভোটারদের মধ্যে আবেদন তৈরি করে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন তিনি। পাঁচ বছর পর নির্বাচনের আবার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় আসেন। কিন্তু ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় দেশে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে নেয়।
ক্ষমতা দখলকারী সামরিক বাহিনী তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও রাজতন্ত্রের প্রতি আনুগত্য না দেখানোর অভিযোগ করে, কিন্তু তিনি তা দৃঢ়ভাবে খণ্ডন করেন। পরে জান্তা সরকার থাকসিনের বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যহারের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনে আর তাতে তিনি অভিযুক্ত হন।
সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের দুই বছর পর ২০০৮ সালে কারাবাসের শাস্তি এড়াতে তিনি বিদেশে পালিয়ে যান। তারপর থেকে অধিকাংশ সময় তিনি দুবাইতে ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা থাকসিনকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানোর আগে শুনানির জন্য সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে হাজির করতে পারে।