রোহিঙ্গা নারীদের অনেকে ধর্ষিত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা দমন অভিযানের মধ্যে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারীদের অনেকেই ধর্ষিত হয়েছেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2017, 02:24 PM
Updated : 13 Sept 2017, 03:42 PM

বুধবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “রোহিঙ্গাদের উপর অবর্ণনীয় অত্যাচার, সেই অত্যাচারে দিশেহারা হয়ে তারা আমাদের দেশে চলে এসেছে।

“আমি ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাদের নির্যাতনের বর্ণনা শুনেছি। যতগুলো নারী এসেছেন তাদের নব্বই শতাংশ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন আর যতগুলো শিশু এসেছে বা সবাই আহত হয়েছেন।”

গত ২৪ অগাস্ট রাতে রাখাইনে কয়েকটি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলার পর রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। পরদিন থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে।

প্রথম দিকে সীমান্তরক্ষীরা বাধা দিলেও রাখাইনে নৃশংসতার প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গাদের ঢুকতে দেওয়া হয়। এরইমধ্যে তিন লাখের বেশি শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে জাতিসংঘের ধারণা।

ইসলাম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমারে নির্যাতন চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে পালিয়ে আসা চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে রয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের উপর এই নির্যাতন চলছে ১৯৭৮ সাল থেকে।

“আমরা দেখেছি, অন্যান্য দেশে ‍দুই হাজার পাঁচ হাজার রিফিউজি গেলে তারা নানান ধরনের কথা বলে। আমরা কিন্তু লক্ষ লক্ষ রিফিউজি নিয়ে বাংলাদেশ চলছে। এমনিতেই আমাদের দেশটি ছোট। ছোট দেশের মধ্যেও লক্ষ লক্ষ রিফিউজিকে আমরা জায়গা দিচ্ছি, তাদের বাসস্থান ও তাদের খাবার ব্যবস্থা করছি।

“কারণ আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন যে, পৃথিবী আজকে শোষিত এবং শোষকের দুই দল হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হল শোষিতের পক্ষে। যারা শোষকের নির্যাতনের পরে দেশত্যাগ করেছে, তারা এই রোহিঙ্গা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে।”

রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশের সামাজিক ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়ার কথা স্বীকার করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা যাতে নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তাদের নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, নাম, পরিবারের সদস্য সংখ্যা, মিয়ানমারের কোন জায়গা থেকে এসেছে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

“আামাদের আইডি কার্ডে যেভাবে থাকে, সেভাবে বায়োমেট্রিক সহকারে একটি পরিচয়পত্র আমরা দেব।”