গুপ্তচরবৃত্তির শঙ্কা: আইরিশ পার্লামেন্ট থেকে চীনা ক্যামেরা সরানোর দাবি

ডাবলিনের ‘হাউজেস অফ দ্য ইরকটাসের’ ভেতর ও বাইরে ‘হিকভিশন’ ব্র্যান্ডের ক্যামেরার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই সপ্তাহান্তে চিঠি পাঠিয়েছে এক মানবাধিকার দল।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2023, 09:49 AM
Updated : 13 Feb 2023, 09:49 AM

আইরিশ পার্লামেন্টের আশপাশে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত কোম্পানির তৈরি ক্যামেরার ব্যবহার নিয়ে শঙ্কা বেড়েছে।

ডাবলিনের ‘হাউজেস অফ দ্য ইরকটাসের’ ভেতর ও বাইরে ‘হিকভিশন’ ব্র্যান্ডের ওই নজরদারি ক্যামেরার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই সপ্তাহান্তে চিঠি পাঠিয়েছে এক মানবাধিকার দল।

নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে বেশ কিছু সংখ্যক পশ্চিমা দেশের বিচার বিভাগ ও অন্যান্য দপ্তরে নিষিদ্ধ হয়েছে হিকভিশনের ইলেকট্রনিক পণ্য। এই সপ্তাহে, জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সমস্যাকে কারণ দেখিয়ে নিজস্ব প্রতিরক্ষা ঘাঁটি থেকে কোম্পানির শত শত ক্যামেরা সরিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়াও।

নভেম্বরে মার্কিন সরকার বলেছে, নিজস্ব যোগাযোগ নেটওয়ার্কের নিরাপত্তায় তারা হিকভিশন’সহ বেশ কিছু সংখ্যক পরিচিত চীনা ব্র্যান্ডের টেলিযোগাযোগ ও ভিডিও নজরদারির ডিভাইস নিষিদ্ধ করছে।

একই মাসে বিভিন্ন ব্রিটিশ সরকারী ভবনেও এই কোম্পানির তৈরি সিকিউরিটি ক্যামেরার ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে

এই সপ্তাহের শেষে ইরকটাস কমিশনের কাছে দেওয়া এক চিঠিতে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির হিকভিশন নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশটির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা’সহ মানবাধিকার দল ‘আইরিশ কাউন্সিল ফর সিভিল লিবার্টিস (আইসিসিএল)’।

তারা আরও বলেছে, ইতালিতে থাকা এর বিভিন্ন ডিভাইস চীনে ডেটা পাঠিয়েছে।

“ইরকটাসের ভেতর থাকা ক্যামেরাগুলো চীনে তথ্য পাঠাতে পারে এমন ঝুঁকির পাশাপাশি, নিরাপত্তা গবেষকরা এতে নিয়মিতই নতুন নিরাপত্তা দুর্বলতা খুঁজে পান। এর ফলে, হ্যাকাররা বিভিন্ন হিকভিশন ক্যামেরায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দখলের সুযোগ পায়।” --বলেন আইসিসিএল-এর প্রযুক্তি সহকর্মী ড. ক্রিস শ্রিশাক।

“ক্যামেরাগুলো যা দেখে ও সম্ভবত যা শোনে, সেগুলো হ্যাকাররা রেকর্ড করতে পারে।”

তিনি আরও যোগ করেন, ইরকটাস ভবনের ভেতরে হিকভিশনের বিভিন্ন ক্যামেরার কার্যক্রম ও এর ভিত্তি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেছে আইসিসিএল। ক্যামেরাগুলো এমন জায়গায় বসানো, যেখান থেকে তারা বিভিন্ন টিডি (আইরিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘ডেইল এরিয়ানের’ সদস্য), সিনেটর ও কর্মীদের ব্যক্তিগত কথোপকথনের ভিডিও ধারণ করতে পারে।

আইসিসিএল আরও বলেছে, হিকভিশন চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ওপর চালানো ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত। এর আগে অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে কোম্পানিটি।

কাউন্সিল জিজ্ঞাসা করেছে, নিরাপত্তা ঝুঁকি, মানবাধিকার ঝুঁকি ও ডেটা সুরক্ষা প্রভাবের বিষয়গুলো মূল্যায়ন করে হিকভিশন ক্যামেরা ব্যবহৃত হয়েছে কি না। আর এইসব মূল্যায়ন সর্বজনীন করা হবে বা হাউজেস অফ দ্য ইরকটাসের ‘জরুরি ভিত্তিতে’ সকল হিকভিশন ক্যামেরা ও সরঞ্জাম  সরাবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে মানবাধিকার সংস্থাটি।

দেশটির বিচার মন্ত্রী সায়মন হ্যারিস বলেন, সাধারণত নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেন না।

“আমি নিশ্চিত, লেইনস্টার হাউসের কর্তৃপক্ষ আমাদের জাতীয় পার্লামেন্ট নিরাপত্তার বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব সহকারে নিয়ে থাকে।” --বলেন তিনি।

এই প্রসঙ্গে হিকভিশনের মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করেছিল ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট, কিন্তু কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।