প্ল্যাটফর্মে ‘ইহুদি বিরোধী পোস্ট রাখার’ অভিযোগে সামাজিক জায়ান্ট টুইটারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে জার্মানিতে।
এই মামলায় জার্মান দুটি দল দাবি করে, ইহুদী ধর্মাবলম্বীদের ওপর আক্রমণ চালানো ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ‘হলোকাস্টের’ ঘটনা অস্বীকার সম্পর্কিত ছয়টি পোস্ট সরাতে ব্যর্থ হয়েছে টুইটার।
বিবিসি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, এইসব পোস্ট প্রকাশ পেয়েছে অক্টোবরে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণের পর।
তবে, কোম্পানির সামগ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে কাজ করা তার বিভিন্ন টুইটে এই ঘটনা সম্পর্কে কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
ইহুদি বিরোধী মনোভাব প্রকাশ ও হলোকাস্টের ঘটনাকে অস্বীকার করা জার্মানিতে অবৈধ।
এমনকি টুইটারের নিজস্ব শর্তাবলীও লঙ্ঘন করে এটি।
‘ঘৃণামূলক কনটেন্ট’
“টুইটার আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।” --বলেন অলাভজনক সংস্থা ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন অফ জুয়িশ স্টুডেন্টস (ইইউজেএস)’-এর প্রেসিডেন্ট আভিটাল গ্রিনবার্গ। ‘হেইট এইড’ নামের এক সংস্থার পাশাপাশি তারাও এই আইনি পদক্ষেপে অংশ নিয়েছে।
“ঘৃণামূলক কনটেন্ট ছড়ানোর সুযোগ দিয়ে ব্যবহারকারী বিশেষ করে ইহুদী ধর্মাবলম্বীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে কোম্পানিটি।”
টুইটার এই ধরনের কনটেন্ট সরাতে বাধ্য কি না, তা-ই নির্ধারণের চেষ্টা চালানো হবে এই মামলায়।
“টুইটার নিশ্চিত করেছিল, তারা প্ল্যাটফর্মে কোনো সহিংস কনটেন্ট সহ্য করবে না। ব্যবহারকারীর এই ভরসার জায়গা তাদের রাখা উচিৎ” --বলেন হেইটএইড প্রধান জোসেফাইন ব্যালন।
বড় জরিমানা
২০২১ সালে মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণের আগে ব্রিটিশ অলাভজনক সংস্থা ‘ক্যামপেইন এগেইনস্ট অ্যান্টিসেমিটিজম’ বলেছে, কোম্পানির নীতিমালা অগ্রাহ্য হচ্ছে। আর তারা ইহুদীদের ওপর আক্রমণ চালানো চারশ থেকে এক হাজার ঘৃণামূলক কনটেন্ট থাকা টুইট সরিয়েছে।
এর আগের বছর, যুক্তরাজ্যের মিউজিশিয়ান উইলির এই ধরনের বিভিন্ন কনটেন্ট সরাতে দেরি করায় সমালোচনার মুখে পড়ে টুইটার। পরবর্তীতে তিনি এর জন্য ক্ষমা চেয়ে টুইটগুলোকে ‘ইহুদি বিরোধী’ হিসেবে স্বীকার করে নেন।
যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এই ধরনের কনটেন্ট সরাতে সামাজিক নেটওয়ার্কগুলোর আরও বেশি ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
ফেইসবুক ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকের মতো শীর্ষ সামাজিক প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ উঠেছে আগে।
যুক্তরাজ্যের অনলাইন সুরক্ষা আইনের অধীনে, ঘৃণামূলক কনটেন্ট সরানোর বেলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে বড় জরিমানা গুণতে হবে বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানিকে।
এই গ্রীষ্মে আইনটি পাশ হওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যুক্তরাজ্যের সংস্কৃতি মন্ত্রী মিশেল ডনেলান।