শাওমি’র ১৩ প্রো ফোনে থাকছে এক ইঞ্চির বিশাল সেন্সর

দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইসের মধ্যে বড় পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে ক্যামেরা। ন্যূনতম আলোতেও সেরা ও উজ্জ্বল ছবি ধারণে এতে আছে ‘এফ/১.৯’ অ্যাপারচার।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2023, 08:13 AM
Updated : 27 Feb 2023, 08:13 AM

বার্সেলোনায় আয়োজিত ‘মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে’ আত্মপ্রকাশ করেছে শাওমি’র ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইস ‘১৩ প্রো’।

ডিসেম্বরে চীনে উন্মোচিত এই ডিভাইসের এক ইঞ্চির সেন্সর, ‘লাইকা’ লেন্স ও ১২০ ওয়াটের দ্রুতগতির চার্জিং ব্যবস্থােই দেখা যাচ্ছে এর ‘বাজির ঘোড়া’। ওই হিসাবে, এর ‘স্যামসাং গ্যালাক্সি এস’ সিরিজের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হওয়ার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকক্রাঞ্চ।

দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইসের মধ্যে বড় পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে ক্যামেরা। অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, শাওমি এতে ‘সনি আইএমএক্স৯৮৯’ নামে পরিচিত এক ইঞ্চির বিশাল ৫০ মেগাপিক্সেলের সেন্সর ব্যবহার করেছে। ন্যূনতম আলোতেও সেরা ও সবচেয়ে উজ্জ্বল ছবি তোলার জন্য এতে আছে ‘এফ/১.৯’ অ্যাপারচার।

‘ভিভো’ ও ‘শার্প’সহ কয়েকটি ফোন উৎপাদক কোম্পানি এরইমধ্যে নিজেদের কিছু মডেলে একই সেন্সর ব্যবহার করেছে। এ ছাড়া, ‘৮কে’ রেজুলিউশনে ভিডিও ধারণের সক্ষমতা আছে এই ক্যামেরায়। আর ‘ডলবি ভিশনে’ রেকর্ড করলে এতে ৬০ ফ্রেম পার সেকেন্ডে ((এফপিএস)) ‘৪কে’ রেজুলিউশনের সুবিধা মিলবে।

ডিভাইসটিতে ‘ফ্লোটিং লেন্স’ উপাদানসহ একটি ৫০ মেগাপিক্সেলের টেলিফটো ক্যামেরাও আছে। এর ফলে, ‘৩.২এক্স’ পর্যন্ত বিরতিহীন জুমের সুবিধা মেলে।

পাশাপাশি, এতে ৫০ মেগাপিক্সেলের ‘আলট্রাওয়াইড’ সেন্সরও আছে। এ ছাড়া, এর ৩২ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরায় নাইট মোড ও ডুয়াল ফ্রেমিং (০.৮ এক্স ও ১ এক্স) মোডের মতো সুবিধাও আছে।

ডিভাইসের সকল ক্যামেরা ও লাইকার বিভিন্ন লেন্স বসানো হয়েছে পেছনের এক বিশাল বর্গাকার বাক্সে। এর আগে অন্যান্য বর্গাকৃতির ক্যামেরায় অনেক সমস্যা দেখা গেলেও, এই ক্যামেরাকে ‘বাকিদের চেয়ে আলাদা’ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে টেকক্রাঞ্চ।

ক্যামেরার সিস্টেম ছাড়াও শাওমি ১৩ প্রো’র বিভিন্ন সুবিধা ২০২৩ সালের অ্যান্ড্রয়েড ফ্ল্যাগশিপের জন্য ‘উপযুক্ত’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এতে আছে কোয়ালকমের দ্বিতীয় প্রজন্মের ‘স্ন্যাপড্রাগন ৮’ প্রসেসর, ১২০ হার্টজের রিফ্রেশ রেট’সহ ৬.৭৩ ইঞ্চি ‘ডব্লিউকিউএইচডি+’ অ্যামোলেড ডিসপ্লে, সর্বোচ্চ উজ্বলতার জন্য এক হাজার নয়শটি নিট, ডলবি ভিশন সুবিধা, ‘এইচডিআর১০+’, ‘এইচএলজি এইচডিআর’ মানদণ্ড, ১২ জিবি’র ‘এলপিডিডিআর৫এক্স’ র‍্যাম ও ‘ইউএসএফ ৪.০’ স্টোরেজ।

শাওমির সর্বশেষ এই ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইসে আছে প্রতি ঘণ্টায় চার হাজার আটশ ২০ মিলিএম্পিয়ারের ব্যাটারি, যা একশ ২০ ওয়াটের চার্জারের মাধ্যমে কেবল কয়েক মিনিটের মধ্যেই চার্জ দেওয়া যায়। তবে, এইসব ‘চার্জিং ব্রিক’ আকারে বিশাল ও মোটা।

ডিভাইসটি ৫০ ওয়াটের তারবিহীন চার্জিং ব্যবস্থার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। আর ইয়ারবাড সংযোগের বেলায় ‘চার্জিং পাকের’ মাধ্যমে ১০ ওয়াটের ‘রিভার্স চার্জিং’ ব্যবস্থাও সমর্থন করে এটি।

২৫৬ জিবি ও ৫১২ জিবি স্টোরেজের দুটি সংস্করণে ডিভাইসটি মিলবে সিরামিক সাদা ও সিরামিক কালো রঙে। আর এটি ইউরোপে পাওয়া যাবে ৮ মার্চ থেকে। এর দাম শুরু হবে এক হাজার তিনশ ৭৩ ডলার থেকে।

নতুন ফ্ল্যাগশিপ বাদেও ‘শাওমি ১৩’ (এক হাজার ৫৬ ডলার থেকে) ও ‘শাওমি ১৩ লাইট’ (পাঁচশ ২৭ ডলার) নামে দুটি ডিভাইস উন্মোচন করেছে কোম্পানিটি।

বর্তমানে, বৈশ্বিকভাবে কিছুটা ‘অদ্ভুত’ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শাওমি। এখন অ্যাপল, ওপো, ভিভো ও চীনের ‘অনার’-এর মতো স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানির চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে। ভারতে ফোন শিপমেন্টের বেলায় গত কয়েক বছর কোম্পানিটি রাজত্ব করলেও গত প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের কাছে নিজের শীর্ষস্থান হারিয়েছে কোম্পানিটি।

এমনকি কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীদের বিদায়, চীন বিরোধী মনোভাব ও বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার মাধ্যমে আয়কর সংশ্লিষ্ট তদন্তের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে শাওমি। এর পরও, শাওমি নিজেদের সেরা পণ্যই বাজারে আনতে চায় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে টেকক্রাঞ্চ।