স্মার্টফোন অ্যাপের প্রচলিত চেহারা আমূল বদলে দেবে এআই

মোবাইল নির্মাতা মটোরোলা ও স্যামসাং উভয় কোম্পানিই নমনীয় স্মার্টফোন দেখিয়েছে যা স্মার্টওয়াচের মতো হাতের চারপাশে বাকানো যাবে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Feb 2024, 07:06 AM
Updated : 29 Feb 2024, 07:06 AM

নতুন যুগের স্মার্টফোন হিসাবে এমন ডিভাইস আসতে পারে যা হাতের কব্জির চারপাশে মোড়ানো যাবে। পাশাপাশি, বড় পরিবর্তন আসতে পারে মোবাইল ফোন অ্যাপের চেনা চেহারা।

এ সপ্তাহে স্পেনের বার্সেলোনায় শুরু হয়েছে মোবাইল ফোন কেন্দ্রিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়োজন “মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস” (এমডাব্লিউসি)। আর সেখানে উন্মোচিত স্মার্টফোনের বিভিন্ন ‘কনসেপ্ট’ বা ধারণা অনুসারে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইনডিপেন্ডেন্ট।

সোমবার ‘এমডাব্লিউসি’ আয়োজনে মোবাইল নির্মাতা মটোরোলা ও স্যামসাং উভয় কোম্পানিই নমনীয় স্মার্টফোন দেখিয়েছে যা স্মার্টওয়াচের মতো হাতের চারপাশে মোড়ানো যাবে। এ ছাড়া, জার্মান মোবাইল নির্মাতা ‘ডয়েচে টেলিকম’ এমন এক স্মার্টফোন দেখিয়েছে যেখানে প্রথাগত অ্যাপের বদলে কেবল এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট রয়েছে।

চিপ নির্মাতা ‘কোয়ালকম টেকনোলোজিস ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক কোম্পানি ‘ব্রেইনডটএআই’-এর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে ‘ডয়েচে টেলিকম’ তাদের ‘টি-ফোন’ নামের মোবাইলটি তৈরি করেছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ফোনটি নতুন করে ভাবায়, একজন ব্যবহারকারী কীভাবে নিজের ফোনের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করে। এ ছাড়া, আগামী এক দশকের মধ্যে প্রচলিত অ্যাপগুলো ‘অকেজো’ হয়ে যাবে বলেও দাবি করেছেন কোম্পানির নির্বাহী কর্মকর্তারা।

“কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও তথাকথিত ‘লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল’ (এলএলএম) খুব দ্রুতই মোবাইল ফোনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে” – বলেছেন ডয়েচে টেলিকমের প্রধান পণ্য কর্মকর্তা জন আব্রাহামসন৷

“এআই দিয়েই আমরা গ্রাহকদের জীবন সহজ করবো। এটি দৈনন্দিন জীবনের প্রকৃত বন্ধু যা চাহিদা মেটাবে ও ডিজিটাল জীবনকে সহজ করবে।”

নতুন উদ্ভাবনের অভাবের কারণে সাম্প্রতিক কয়েক বছরে স্মার্টফোনের বিক্রি কমেছে বলে লিখেছে ইনডিপেন্ডেন্ট। ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাপী ১৪৭ কোটি ইউনিট স্মার্টফোন বিক্রি হয়। ইন্টারন্যাশনাল ডেটা কর্পোরেশন (আইডিসি)’র সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, এ সংখ্যাটি গত বছর ১১৭ কোটি ইউনিটে নেমে এসেছে।

এ প্রবণতার ওপর ভিত্তি করে কিছু বিশ্লেষক দাবি করেছেন এরইমধ্যে স্মার্টফোনের ‘সেরা সময়’ পার হয়ে গিয়েছে ও নির্মাতারা এ খাতকে এখন নতুনভাবে উদ্ভাবন করতে চাইছেন।

সম্প্রতি অন্যান্য পণ্য উন্মোচনেও স্মার্টফোন পরবর্তী যুগের সম্ভাব্য গ্যাজেট হিসাবে স্ক্রিন বিহীন ভিডিও ক্লিপ থেকে শুরু করে একেবারেই সাধারণ বর্গাকার ডিভাইস দেখতে পাওয়ার কথা প্রতিবেদনে লিখেছে ইনডিপেন্ডেন্ট।

অ্যাপল, স্যামসাং ও হুয়াওয়ের মতো শীর্ষ ফোন নির্মাতা কোম্পানি আগামী বছরগুলোয় স্মার্টফোনে সম্ভাব্য নতুন উদ্ভাবন নিয়ে আসবে। তবে, সেগুলোর ব্যবহারপদ্ধতির ওপর জেনারেটিভ এআইয়ের প্রভাব থাকবে বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ফোনের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কে মৌলিক পরিবর্তন আনবে– সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে ইন্ডিপেনডেন্টের কাছে এমন ধারণা প্রকাশ করেছেন কোয়ালকমের প্রধান নির্বাহী ক্রিস্টিয়ানো আমন।

“আমরা অ্যাপ কেন্দ্রিক ইউজার ইন্টারফেইসে এ পরিবর্তনটি দেখতে যাচ্ছি,” – বলেছিলেন তিনি।

“জেনারেটিভ এআই হবে মানুষ ও অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যের ইন্টারফেইস। এ খাতের বড় পরিবর্তনটি আমরা দেখতে পারি ক্লাউড ও ডিভাইস এক হয়ে গেলে।”