২০২৯ নাগাদ ‘আসতে পারে’ সুপার ইনটেলিজেন্ট এআই

“এর সঙ্গে আরও ১০ থেকে ১৫ বছর যোগ করলে একটি একক কম্পিউটারে মোটামুটি গোটা মানব সমাজের মস্তিষ্কের সক্ষমতা চলে আসতে পারে।”

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2024, 11:48 AM
Updated : 8 March 2024, 11:48 AM

এরই মধ্যে ‘আর্টিফিসিয়াল জেনারেল ইনটেলিজেন্স (এজিআই)’ শব্দকে জনপ্রিয় করেছেন শীর্ষ কম্পিউটার বিজ্ঞানী বেন গোয়ের্টজেল। এখন তার দাবি, ২০২৯ সালের মধ্যেই চলে আসবে সুপার ইনটেলিজেন্ট এআই।

‘সিঙ্গুলারিটিনেট’ নামের এআইভিত্তিক সাইট প্রতিষ্ঠা করেছেন গোয়ের্টজেল, যার লক্ষ্য, একটি ‘বিকেন্দ্রীভূত, গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উপকারী’ এজিআই ব্যবস্থার বিকাশ ঘটানো।

এ বিষয়ে ‘বেনিফিসিয়াল এজিআই সামিট ২০২৪’-এ একটি বক্তৃতা দিতে গিয়ে গোয়ের্টজেল বলেন, ‘আমরা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারি, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিজেই নিজেকে আরও উন্নত করতে পারবে।’

এখনও এর বাস্তব রূপ দেখার সম্ভাবনা তৈরি না হলেও এমনটি কেন দ্রুতই ঘটতে যাচ্ছে, সে কারণগুলোর একটি তালিকা তৈরি করেছেন গোয়ের্টজেল।

তার মতে, এমনটি ঘটার সম্ভাব্য কারণ, মানুষ এমন এক সূচকীয় সময়ের মধ্যে আছে, যেখানে রৈখিক বৃদ্ধির তেমন ভূমিকা নেই। এতে করে মানুষের প্রচলিত ভাবনার ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তনের গতি বোঝা কঠিন হতে পারে।

“২০২৯, ২০৩০ সালের মধ্যেই বিভিন্ন একক কম্পিউটারে একজন মানুষের মস্তিষ্কের কম্পিউটিং সক্ষমতা চলে আসার সম্ভাবনা আছে,” বক্তৃতায় বলেন গোয়ের্টজেল।

“এর সঙ্গে আরও ১০ থেকে ১৫ বছর যোগ করলে একটি একক কম্পিউটারে মোটামুটি গোটা মানব সমাজের মস্তিষ্কের সক্ষমতা চলে আসতে পারে।”

চ্যাটিজিপিটি’র মতো ‘লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম)’কে এর উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এই বিজ্ঞানী।

তবে তিনি বিশ্বাস করেন, বিভিন্ন লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল নিজেই এজিআই’য়ের পথ তৈরি করতে পারবে না কারণ সেগুলোতে বাস্তব জগৎ বোঝার ক্ষমতা নেই। বরং, এগুলো এক ধরনের ‘মশলাদার’ স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে।

গোয়ের্টজেলের বিশ্বাস, লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলগুলো এজিআই’য়ের উপাদান হিসেবে কাজ করতে পারে, যার মাধ্যমে সম্ভবত একটি একক ব্যবস্থা অর্থাৎ ‘সিঙ্গুলারিটির’ দিকে যাওয়ার পথ প্রশস্ত হতে পারে। এমনকি গোয়ের্টজেলের নিজস্ব কোম্পানির এআই ব্যবস্থা ‘ওপেনকগ হাইপারন’ও হতে পারে এটি।

“আমরা ‘হাইপারন’ সিস্টেমকে যা শেখাতে পারি, তা সম্ভবত– সফটওয়্যার কোড ডিজাইন ও লিখতে পারা,” এক গবেষণাপত্রে লেখেন গোয়ের্টজেল।

“এলএলএম এরইমধ্যে এমন সহজ প্রেক্ষাপটে কাজ করে। তবে ‘হাইপারনের’ নকশা হয়েছে, গভীর সৃজনশীলতা ও ‘মাল্টি-স্টেজ’ বা একাধিক পর্যায়ের যুক্তির ক্ষমতা বাড়ানোর কথা মাথায় রেখে।”

“কোড ডিজাইনিং ও লেখার সক্ষমতাওয়ালা একটি ব্যবস্থা চলে এলে তাতে নিজেই নিজেকে উন্নত করার ও বিভিন্ন সংস্করণের কোডিংয়ের মতো সুবিধা মিলবে। এতে করে আমরা এমন এক রাজ্যে প্রবেশ করতে পারি, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে বড় বিপ্লব ঘটাবে ও একে ‘টেকনোলজিকাল সিঙ্গুলারিটি’র দিকে নিয়ে যাবে।”

তবে এ বিষয়ে একইসঙ্গে আনন্দিত ও শঙ্কিত গোয়ের্টজেল। কারণ ‘প্যান্ডোরার এ বাক্সটি’ খোলার আগে যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখা জরুরী। আর এ ধরনের প্রযুক্তি কীভাবে সামলাতে হয়, তা নিয়ে এখনও মানুষের ধারণা তৈরি হয়নি।

“আমার ধারণা, একবার মানব পর্যায়ের ‘এজিআই’তে পৌঁছে গেলে আপনি কয়েক বছরের মধ্যেই ‘সুপারহিউম্যান এজিআই’র লক্ষ্যে পৌঁছাবেন। তবে, এক্ষেত্রে এজিআই বিকাশের সময় একে নিজের রক্ষণশীলতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, না হলে এটি নিজেই নিজের গলা চেপে ধরবে।”