একটি ভ্যাম্পায়ার প্লাস্টিকের বাক্সের ভেতর নিজের ডানা ব্যবহার করে দৌড়াতে পারে। এদের দৌড়ানোর গতি ঘণ্টায় এক দশমিক আট কিলোমিটার।
Published : 09 Nov 2024, 02:19 PM
কেবল পিশাচ কল্পকাহিনিতেই ভ্যাম্পায়ার থাকে, এমন নয়। ভ্যাম্পায়ার শ্রেণির বাদুড় সত্যিই আছে এবং তারা রক্ত খায়।
এখন নতুন গবেষণা বলছে, বিশেষ এ প্রজাতির বাদুড় ট্রেডমিলেও দৌড়াতে পারে, যেখানে তারা বিশেষ এক উপায়ে রক্ত থেকে শক্তি সঞ্চয় করে থাকে।
এ গবেষণার লক্ষ্য ছিল, ভ্যাম্পায়ার বাদুড় শক্তি সঞ্চয়ের জন্য কীভাবে রক্ত ব্যবহার করে ও এরা কত দ্রুত ট্রেডমিলে দৌড়াতে পারে, তা পরীক্ষা করে দেখা।
এর ফুটেজে দেখা গেছে, একটি বাদুড় প্লাস্টিকের বাক্সের ভেতর নিজের ডানা ব্যবহার করে প্রতি মিনিটে ৩০ মিটার গতিতে দৌড়াতে পারে। সে হিসাবে এদের দৌড়ানোর গতি ঘণ্টায় এক দশমিক আট কিলোমিটার।
ভ্যাম্পায়ার বাদুড় এমন বিরল কয়েকটি প্রাণির একটি, যা মাটিতেও দক্ষতার সঙ্গে চলাফেরা করতে পারে। আর এটি নিজের ক্ষুর-ধারালো দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়ার আগে নিঃশব্দে বিভিন্ন ঘুমন্ত শিকার যেমন গবাদি পশু, শূকর ও মুরগির কাছাকাছি যেতে এ সক্ষমতা ব্যবহার করে।
কানাডাভিত্তিক এ গবেষণার জন্য মধ্য আমেরিকার দেশ বেলিজ থেকে ২৪টি ভ্যাম্পায়ার বাদুড় ধরে আনা হয় ও এদেরকে পুষ্টিকর গরুর রক্ত পান করানো হয়েছিল।
ট্রেডমিলে দৌড়ানোর সময় বাদুড়ের মুখ থেকে বের হওয়া কার্বন ডাইঅক্সাইড পরীক্ষা করে এতে অ্যামাইনো অ্যাসিডের অস্তিত্ব খুঁজে পান গবেষকরা, যা প্রোটিন তৈরির ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে বিবেচিত।
এ ছাড়া, ট্রেডমিলে থাকা সকল গতিতেই তাদের শ্বাসযন্ত্রে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড বিনিময়ের অনুপাত একই রকম ছিল বলে উঠে এসেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে।
এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, এইসব বাদুড়ের শক্তির মূল উৎস ছিল প্রোটিন সমৃদ্ধ রক্ত, সংরক্ষিত কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি নয়, যেটি অন্যান্য বেশিরভাগ স্তন্যপায়ী প্রাণীর বেলায় দেখা যায়।
গবেষকরা বলছেন, ‘কোনো বিশেষ খাবার কতোটা দৃঢ়ভাবে পরিপাকতন্ত্রে কাজ করে সেটি এ গবেষণায় উঠে এসেছে’, যেখানে ভ্যাম্পায়ার বাদুড়দের কার্বোহাইড্রেট ও চর্বির পরিমাণ অন্যদের তুলনায় কম।
সাধারণ ভ্যাম্পায়ার বাদুড়ের উচ্চতা স্রেফ সাত থেকে নয় সেন্টিমিটার হলেও একবার রক্তচোষার পর তাদের ভর হয়ে যেতে পারে দ্বিগুণ পর্যন্ত।
এ বাদুড়গুলোকে রাতে দেখা যায়, যেখানে এরা শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে নিজস্ব গতিবিধি নির্ধারণ করে ও চেহারায় ‘হিট সেন্সর’ ছোড়ার মাধ্যমে শিকার প্রাণীদের শনাক্ত করে। আর তাদের লালায় একটি শক্তিশালী ‘অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট’ থাকে, যা খাবার সময় শিকারের রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াটি বন্ধ করে দেয়।
ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটি’র গবেষক জিউলিয়া রসি ও ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টো’র গবেষক কেনেথ ওয়েলচ পরিচালিত এ গবেষণা প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল বায়োলজি লেটার্স-এ।