ডিইআই নীতিমালায় বৈচিত্র্যের কথা থাকলেও এতে মূলত বৈচিত্র্য হিসাবে এলজিবিটিকিউ কমিউনিটির বিষয়টিই প্রাধান্য পায় যুক্তরাষ্ট্রের কর্পোরেট বিশ্বে।
Published : 13 Jan 2025, 04:19 PM
বিনিয়োগকারীদের ডাইভারসিটি, ইক্যুইটি অ্যান্ড ইনক্লুশন বা ডিইআই নীতিমালা বন্ধের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট চেয়েছে অ্যাপলের পরিচালনা পর্ষদ।
এর আগে রক্ষণশীল থিংক ট্যাংক বলে পরিচিত সংগঠন ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর পাবলিক পলিসি রিসার্চ’ বা এনসিপিপিআর প্রযুক্তি জায়ান্টটিকে তাদের ডিইআই নীতিমালা বাতিলের আহ্বান জানানোর পর অ্যাপল এমন পদক্ষেপ নিল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
ডিইআই নীতিমালায় বৈচিত্র্যের কথা থাকলেও এতে মূলত বৈচিত্র্য হিসাবে এলজিবিটিকিউ কমিউনিটির বিষয়টিই প্রাধান্য পায় যুক্তরাষ্ট্রের কর্পোরেট বিশ্বে। অ্যাপল সিইও টিম কুক নিজেও এই কমিউনিটির সদস্য। ২০১১ সালে তিনি অ্যাপল প্রধান হওয়ার পর থেকেই এই টেক জায়ান্ট প্রাইড মাস পালনসহ নানা কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে। এর পাশাপাশি অ্যাপল বোর্ডে তিনি নারী সদস্যও যোগ করেছেন।
অ্যাপল পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা বলেছেন, এনসিপিপিআর-এর প্রস্তাবটি অপ্রয়োজনীয়। কারণ যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য রয়েছে কোম্পানিটির।
এদিকে, এ মাসে ডনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে পদার্পণের আগেই নিজেদের ডিইআই নীতিমালা বাতিল করেছে মেটা ও অ্যামাজন’সহ অন্যান্য বড় মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি। কারণ, ডিইআই নীতিমালার তীব্র সমালোচক ট্রাম্প।
বিনিয়োগকারীদের কাছে অ্যাপলের দায়ের করা নথিতে বলা হয়েছে, “এনসিপিপিআর-এর প্রস্তাবটি অপ্রয়োজনীয়। কারণ, এরইমধ্যে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত কমপ্লায়েন্স বা সম্মতি প্রোগ্রাম রয়েছে অ্যাপলের।”
অ্যাপলের বোর্ড আরও বলেছে, “ডিইআই নীতিমালা বাতিলের পরিকল্পনা আসলে কোম্পানির ভেতরে একটি বিশেষ রাজনৈতিক মতবাদ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা এবং এর মাধ্রমে এই কোম্পানি বা তার নীতিমালা কেমন হবে তার খুঁটিনাটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা।”
এনসিপিপিআর-এর প্রস্তাবটি আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি অ্যাপলের সাধারণ বার্ষিক সভায় বিনিয়োগকারীদের ভোটের জন্য উত্থাপন করা হবে।
ডিইআই প্রোগ্রাম বাতিল না করলে বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে মার্কিন রক্ষণশীল দলগুলো। তারা বলেছে, এ ধরনের নীতিমালা ২০২৩ সালে বিভিন্ন ইউইনিভার্সিটিতে ইতিবাচক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে নেওয়া সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
গত সপ্তাহে নিজেদের ডিইআই নীতিমালা বাতিলের মাধ্যমে সর্বশেষ মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি হয়ে উঠেছে ফেইসবুকের মূল কোম্পানি মেটা। এ তালিকায় যোগ দিয়েছে অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট ও ম্যাকডোনাল্ডসের মতো বড় কোম্পানিও।
গত নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্পের সঙ্গে সমঝোতার দিকে ঝুঁকছেন মেটা প্রধান মার্ক জাকারবার্গ। প্রেসিডেন্টের অভিষেক তহবিলে ১০ লাখ ডলার অনুদান দিয়েছেও কোম্পানিটি।
ইউএফসি’র সভাপতি ও ডনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগী ডানা হোয়াইটকে নিজেদের পরিচালনা পর্ষদে যোগ করেছে মেটা। পাশাপাশি প্লাটফর্মটির ফ্যাক্ট-চেকারদের সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।