ভারত সরকারকে ‘চ্যালেঞ্জ’ টুইটারের

ভারত সরকারের কনটেন্ট মুছে দেওয়ার নির্দেশের সঙ্গে একমত নয় টুইটার। সরকারি নির্দেশনা চ্যালেঞ্জ করতে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2022, 08:12 AM
Updated : 6 July 2022, 08:31 AM

বিশ্বের শীর্ষ প্রভাবশালীদের ব্যবহৃত সামাজিক মাধ্যমটি কর্নাটকের হাইকোর্টে ভারত সরকারের বেশ কয়েকটি নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন করেছে বলে সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।

নির্দিষ্ট কনটেন্ট মুছে দেওয়ার সরকারি নির্দেশ না মানলে ‘কঠোর পরিনামের’ হুমকি দিয়ে জুন মাসেই টুইটার কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল ভারত সরকার। তারই প্রতিক্রিয়ায় টুইটার আদালতরে শরণাপন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। ভারতে টুইটার ব্যবহারকারীর সংখ্যা আনুমানিক দুই কোটি ৪০ লাখ।

পিটিশন দাখিল করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজিভ চন্দ্রশেখর। সকল বিদেশি ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মকে ভারতীয় আইন মানতে হবে বলে টুইট করেছেন তিনি।

ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, জুন মাসেই ভারত সরকার টুইটারকে সতর্ক করে দিয়েছিল যে, কোম্পানিটির জন্য কনটেন্টে ব্লক করার নির্দেশ মানার এটাই ‘শেষ সুযোগ’।

টুইটার ভারত সরকারের ওই হুমকির গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেই আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছে ওই সূত্র।

টুইটারের মতে ভারত সরকারের নির্দেশগুলো দেশের আইনের সঙ্গে ‘প্রক্রিয়াগতভাবে এবং উল্লেখযোগ্যভাবে’ সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এ ছাড়াও, সরকারি নির্দেশগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটিকে ক্ষমতার অপব্যবহারের চেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করছে প্ল্যাটফর্মটি।

বেশ কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছে ভারত সরকার। কিন্তু, সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, ওই অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী অ্যাকাউন্টও আছে। বিজেপি সরকারের সঙ্গে টুইটারের রেষারেষি চলছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। টুইটার আদালতের শরণাপন্ন হওয়ায় নতুন মাত্রা পেল দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব।

জনবিশৃঙ্খলার আশঙ্কার দোহাই দিয়ে গত এক বছরে টুইটারকে বেশ কিছু টুইট মুছে দিতে এবং অ্যাকাউন্ট ব্লক করতে বলেছে ভারত সরকার। বিবিসি জানিয়েছে, গত বছরের কৃষক আন্দোলন এবং সরকারের মহামারী মোকবেলা কৌশলের সমালোচনা করেছে এমন টুইট এবং অ্যাকাউন্টগুলো নিয়েই আপত্তি তুলেছে ভারত সরকার।

কৃষক আন্দোলনের সময়ে ভারতীয় সরকারের আইনি নোটিসের পরিপ্রেক্ষিতে আড়াইশ অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছিল টুইটার। ব্লকড অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে ছিল সংবাদমাধ্যম, অধিকারকর্মী এবং আন্দোলনকারীদের সমর্থক অ্যাকাউন্ট।

তবে, ব্লক করার ছয় ঘণ্টার মাথায় অ্যাকাউন্টগুলো ফিরিয়ে এনে টুইটার বলেছিল, অ্যাকাউন্টগুলো ব্লক করে রাখার পেছনে ‘যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ’ নেই।

মে মাসেই ভারতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে নিজেদের শঙ্কার কথা জানিয়েছিল টুইটার। তার কয়েক দিন আগেই প্ল্যাটফর্মটির ভারতীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছিল স্থানীয় পুলিশ।