ভারত থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে এক্সপ্রেসভিপিএন

ভারতের নতুন ভিপিএন আইনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভিপিএন সেবাদাতা ‘এক্সপ্রেসভিপিএন’।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 June 2022, 07:45 AM
Updated : 6 June 2022, 07:46 AM

দেশটির নতুন ভিপিএন আইন কার্যকর হবে ২৭ জুন। এর পর ব্যবহারকারীর আসল নাম, চিহ্নিতকরণ ডেটা, ব্যবহারের ধরণ এবং আইপি অ্যাড্রেস সংশ্লিষ্ট তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে ভিপিএন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

এক্সপ্রেসভিপিএন বলছে, ভারতের সরকার ব্যবহারকারীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা করছে। এই কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে সেবাটি । ইন্টারনেটে বাকস্বাধীনতা এবং গোপনতার নিরাপত্তা দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকার কথা বলেছে এক্সপ্রেসভিপিএন।

ভিপিএন কী?

ভিপিএন-এর পূর্ণ রূপ হচ্ছে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক।

ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের বেলায় ভিপিএন ব্যবহারকারীর পরিচয় গোপন রাখে। ইন্টারনেটে একজন ব্যবহারকারী বা ওয়েবসাইটের পরিচয় চিহ্নিত হয় তার ইন্টারনেট প্রোটোকল বা আইপির মাধ্যমে। ভিপিএন আইপি ঠিকানা গোপন রাখার মাধ্যমে এই কাজটি করে।

উদাহরণ: ধরা যাক কোনো কারণে সিদ্ধান্ত হলো যে ঢাকা শহরে চট্টগ্রামের কোনো ব্যক্তি ঢুকবেন না এবং এটা বাস্তবায়নের জন্য চট্টগ্রামের সবার গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকায় ঢোকার মুখে মিলিয়ে দেখা হয়। এখন চট্টগ্রামের কেউ যদি অন্য কোনো জেলার কারো গাড়িতে চড়ে ঢাকায় আসেন তবে ওই গাড়িটি আটকাবে না, যেহেতু সেটি চট্টগ্রামের কোনো ব্যক্তির গাড়ি নয়। ঠিক এই কাজটিই করে ভিপিএন।

যদি কোনো দেশে ফেইসবুক নিষিদ্ধ হয় তবে ভিপিএন ফেইসবুকের কনটেন্ট ভিপিএন প্রতিষ্ঠানটির কনটেন্ট হিসেবে ডেটা প্যাকেট আকারে এনক্রিপ্ট করে পাঠায়। উদাহরণ হিসেবে ফেইসবুকের উল্লেখ হলেও এটা যে কোনো সাইটের বেলায় হতে পারে।

ব্যবহারকারীদের কেউ ভারতের সার্ভারে সংযোগ পেতে চাইলে “সিঙ্গাপুর হয়ে ভারত” বা “যুক্তরাজ্য হয়ে ভারতে”র সার্ভারে যুক্ত হতে পারবেন তারা।

ভিপিএন সেবাদাতার বরাত দিয়ে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকরেডার জানিয়েছে, সাম্প্রতিক পদক্ষেপ ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় সার্বিকভাবে খুবই কম প্রভাব পরবে বলে জানিয়েছে এক্সপ্রেসভিপিএন।

ব্যবহারকারী যে দেশ চিহ্নিত করে দেবেন সে দেশের নিবন্ধিত আইপি ঠিকানার সঙ্গে মিলে যাবে তার ভার্চুয়াল অবস্থান, কিন্তু সার্ভারের অবস্থান থাকবে ভিন্ন কোনো দেশে।

ভারতের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্যে এক্সপ্রেসভিপিএন বলেছে, তারা নিশ্চিত থাকতে পারেন যে তাদের অনলাইন ট্রাফিকের তথ্য কেউ সংগ্রহ করছে না এবং এর ওপর সরকারের নজরদারি নেই।

ভারতের নতুন আইনটির প্রস্তাব দিয়েছিল দেশটির ‘কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সার্ট-ইন)’। ভারত এই আইনটিকে সাইবার অপরাধ মোকাবেলার কৌশল হিসেবে দেখছে বলে জানিয়েছে টেকরেডার।

তবে এক্সপ্রেসভিপিএনের দাবি, প্রস্তাবটি ‘সীমা লঙ্ঘন করছে’ এবং এর পরিধি এতোই বড় যে এতে ‘সম্ভাব্য অপব্যবহারের সুযোগ’ তৈরি  হচ্ছে। ভিপিএন সেবাদাতার মতে, “এ ধরনের আইন থেকে আইনপ্রণেতারা যে লাভের কথা বলছেন তার চেয়ে সম্ভাব্য অপব্যবহারে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি।”

বাণিজ্যিক ভিপিএন ব্যবহারের পেছনে গ্রহনযোগ্য কারণ থাকলেও, ভারতীয় আইনপ্রণেতাদের চোখে এই প্রযুক্তি নেতিবাচক বলে জানিয়েছে টেকরেডার।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সকল ভিপিএন সেবা নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন তারা।

আরও পড়ুন