আয়, পাসওয়ার্ড শেয়ার ও নেটফ্লিক্সের অন্যান্য চ্যালেঞ্জ

নেটফ্লিক্স এতদিন বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড শেয়ারের বিষয়টিতে নজর দেয়নি। তবে বিষয়টিতে এখন গুরুত্ব দিয়ে বিকল্প উপায় খুজছে স্ট্রিমিং সেবায় শীর্ষ প্রতিষ্ঠানটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2022, 01:13 PM
Updated : 21 March 2022, 01:13 PM

পাসওয়ার্ড শেয়ারিংয়ের কারণে নেটফ্লিক্সের ব্যবসা বৃদ্ধির হার কমে আসছে এবং বার্ষিক প্রোডাকশন খরচও বাড়ছে। সোজা কথায়, নেটফ্লিক্সের আরও অর্থ প্রয়োজন।

মার্কিন এই স্ট্রিমিং সেবাটি পাসওয়ার্ড শেয়ারিং ‘ক্র্যাকডাউন’ পরীক্ষা করার ঘোষণা দিয়েছে এ সপ্তাহেই। এর ফলে অবশ্য ব্যবহারকারীদের নিজ পরিবারের বাইরে থাকা গ্রাহক সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারে।

সম্ভাব্য এ বিষয়গুলোই পরখ করে দেখার জন্য শীঘ্রই চিলি, কোস্টারিকা এবং পেরুর নেটফ্লিক্স অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীদের সাব-অ্যাকাউন্টে অতিরিক্ত দুজন পর্যন্ত গ্রাহক যোগ করার সুবিধা দেবে প্রতিষ্ঠানটি। কোস্টারিকায় সুবিধাটি পেতে ব্যবহারকারীকে মাসিক খরচের সঙ্গে যোগ করতে হবে অতিরিক্ত তিন ডলার।

নেটফ্লিক্স অনেক বছর ধরেই পাসওয়ার্ড শেয়ারিংয়ের বিষয়ে চোখ বন্ধ রেখেছিল। অতীতে নেটফ্লিক্স প্রধান রিড হেস্টিংস একে ‘ইতিবাচক’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন। তবে নেটফ্লিক্স ব্যবহারকারীর পরিবারের বাইরের কারো সঙ্গে অ্যাকাউন্ট শেয়ারিং তাত্বিকভাবে নিষিদ্ধ ছিল সবসময়ই।

বছরখানেক বা তারও বেশি সময় ধরে অ্যাকাউন্ট শেয়ারিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আভাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যার সম্ভাব্য ফল দেখা যাচ্ছে এ সপ্তাহে ঘোষণা করা পরীক্ষার মাধ্যমে।

নেটফ্লিক্স খুব কঠিন পরিস্থিতিতে সর্বশেষ পরীক্ষাটি আনল। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ সময় ধরে বিস্ফোরক হারে গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি উপভোগ করেছে, তবে সম্প্রতি সেই স্রোতে ভাটা পড়েছে।

নেটফ্লিক্সের আকাশচুম্বী কনটেন্ট বাজেটের বিপরীতে ভারসাম্য ও নগদ অর্থ আনতে প্রতিষ্ঠানটিকে সম্ভবত আরও সৃজনশীল উপায় খুঁজতে হবে। অ্যাকাউন্ট শেয়ারিংয়ে কড়াকড়ি নজরদারি অবশ্যই এর একটি উপায়, কারণ অনেক পরিবারে নেটফ্লিক্স অপরিহার্য একটি সেবা।

“যখন আপনার দৈনন্দিন জীবনে কোনো কিছু গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তখন ‘পাসওয়ার্ড শেয়ারিং ক্র্যাকডাউন’-এর মতো বিষয় সহজ হয়ে যায়।”-- নেটফ্লিক্সের অ্যাকাউন্ট শেয়ারিংয়ের বিষয়ে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জকে বলেছেন লাইটশেড পার্টনার্স-এর বিশ্লেষক রিচার্ড গ্রিনফিল্ড।

নেটফ্লিক্স এবং বাজারের দূর্বল প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে মূল পার্থক্য এটি। অনেকের মতেই, এদের বেশিরভাগ শীর্ষ প্রতিষ্ঠানটির সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে পরিপূরক হওয়ার প্রতিযোগিতায় আছে। অন্যদের মতোই, নেটফ্লিক্স নিজেদের খরচ কমাতে সেবার দাম বাড়াচ্ছে। বাকিরা যখন নিজ নিজ সেবায় বিজ্ঞাপন এনে গ্রাহক ধরে রাখার চেষ্টা করছে, সে পথটি এখনো মাড়ায়নি নেটফ্লিক্স।

অ্যাকাউন্ট শেয়ারিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরও নেটফ্লিক্স ‘পেইড’ গ্রাহক যোগ করার বিকল্প উপায় দিয়েছে।

উদাহরণ হিসেবে গ্রিনফিল্ড বলছেন, “পাসওয়ার্ড ক্র্যাকডাউন-এর কারণে মার্কিন বাজারে নেটফ্লিক্স হয়তো আরও এক থেকে দুই কোটি গ্রাহক যোগ করবে। এভাবেই আপনি অবশিষ্ট শূন্যস্থান বন্ধ করতে পারেন।”

নেটফ্লিক্স একে এখন পর্যন্ত শুধু একটি ‘পরীক্ষা’ বলছে। এখনো অনেকেই আছেন যারা সাবেক প্রেমিক-প্রেমিকা অথবা দাদা-দাদিদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছেন যাদের অ্যাকাউন্ট শেয়ারিং করতে কোনো আপত্তি নেই। সেক্ষেত্রে নেটফ্লিক্সের কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদিও অ্যাকাউন্ট শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়াতে প্ল্যাটফর্ম থেকে ব্যবহারকারীদের চলে যাওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে, এটি বাজারে প্রতিযোগিতা করা যেকোনো স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের জন্য আদর্শ পরিস্থিতি নয়।