ইউক্রেইন সরকারকে এআই নির্ভর ফেইশল রিকগনিশন সেবার ডেটাবেইজ ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ‘ক্লিয়ারভিউ এআই’। প্রতিষ্ঠানটির বলছে, ওয়েব থেকে সংগ্রহ করা এক হাজার কোটি মুখায়বের ডেটা আছে তাদের হাতে।
নিজস্ব প্রযুক্তি ইউক্রেইন সরকারকে রাশিয়ান অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে, ভুয়া তথ্যের প্রচার মোকাবেলায় এবং মৃত ব্যক্তির পরিচয় চিহ্নিত করতে সহযোগিতা করবে বলে দাবি করেছে ক্লিয়ারভিউ এআই।
এই প্রযুক্তি ইউক্রেইন সরকারকে বিনা খরচে ব্যবহারের করতে দিচ্ছে ক্লিয়ারভিউ। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ইউক্রেইনের কর্মকর্তাদের থেকে পাঠানো চিঠি দেখার সুযোগ হয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও বিবিসির।
কিন্তু এই একই প্রযুক্তির কারণে বিভিন্ন সময়ে বাজার পর্যবেক্ষক ও নীতিনির্ধারকদের জরিমানা দিতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে।
এ প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী হোয়ান টন-থাট বিবিসিকে এক বিবৃতিতে বলেন, “আমি এটা নিশ্চিত করতে পেরে খুশি যে ক্লিয়ারভিউ এআই ইউক্রেইনের কর্মকর্তাদের সর্বাধুনিক ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে যেন বিদ্যমান সংকটে তারা এটি ব্যবহার করতে পারে।”
প্রতিষ্ঠানটি দাবি করছে, তাদের ডেটাবেইজে থাকা মুখায়বের তথ্যের একটা বড় অংশ রাশিয়ার সামাজিক মাধ্যম সাইটগুলো থেকে সংগ্রহ করা।
ইউক্রেইনের কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে ক্লিয়ারভিউ নিজস্ব ডেটাবেইজে রাশিয়ার সামাজিক মাধ্যম ‘ভিকে’ থেকে সংগ্রহ করা দুইশ’ কোটি মুখায়বের তথ্য থাকার দাবি করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ইউক্রেইন সরকারের কাছে পাঠানো চিঠিতে কোন কোন ক্ষেত্রে তার প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তি কাজে আসতে পারে সেটাও উল্লেখ করেছেন টন-থাট। এর মধ্যে আছে:
ইউক্রেইন শনিবার থেকেই এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন টন-থাট। তবে এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে কোনো প্রতিক্রিয়া বা মন্তব্য জানায়নি ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিভিন্ন সময়ে নীতিনির্ধারকতের সমালোচনার মুখে পড়েছে ক্লিয়ারভিউ এআই। গেল বছরের নভেম্বর মাসেই প্রতিষ্ঠানটিকে এক কোটি ৭০ লাখ পাউন্ড জরিমানা করেছিল যুক্তরাজ্যের পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘ইনফর্মেশন কমিশনার্স অফিস’।
প্রতিষ্ঠানটিকে সম্প্রতি এক কোটি ৬৮ লাখ পাউন্ড জরিমানা করেছে ইতালির বাজার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। ক্লিয়ারভিউয়ের বিরুদ্ধে সংস্থাটির অভিযোগ ছিল– ইতালির নাগরিকদের উপর প্রতিষ্ঠানটি যে কৌশল প্রয়োগ করেছে তা “বায়োমেট্রিক নজরদারি কৌশলের” সমতূল্য।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীও একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে; কিন্তু ইন্টারনেট থেকে ছবি সংগ্রহের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রেও মামলার মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
অন্যদিকে, এই প্রযুক্তি মানুষের পরিচয় যাচাই করতে গিয়ে ভুল করতে পারে বলে শঙ্কিত সমালোচকরা।
এ প্রসঙ্গে নিউ ইয়র্কভিত্তিক প্রতিষ্ঠান “সার্ভেইলেন্স টেকনোলজি ওভারসাইট প্রজেক্ট’-এর নির্বাহী পরিচালক অ্যালবার্ট ফক্স কান রয়টার্সকে বলেন, এটা সম্ভব যে “আমরা ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে ব্যবহৃত প্রযুক্তির বিপরীতমুখী প্রভাব দেখবো এবং এটি যাদের সাহায্য করার কথা, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।”
কারো পরিচয় যাচাই করার জন্য কেবল ক্লিয়ারভিউ এআই-এর উপর নির্ভর করা নিরুৎসাহিত করেছেন খোদ টন-থাট।