মেটাভার্সের জন্য এআই প্রকল্পের ঘোষণা জাকারবার্গের

‘মেটাভার্স’-এর জন্য সম্প্রতি কয়েকটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী এআই প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছেন মার্ক জাকারবার্গ। পাশাপাশি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই প্রযুক্তিকে ‘মেটাভার্সের চাবিকাঠি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ফেইসবুক তথা মেটা’র প্রধান নির্বাহী।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2022, 10:07 AM
Updated : 24 Feb 2022, 10:07 AM

লাইভস্ট্রিমে ঘোষণা দেওয়ার সময় ‘বিল্ডার বট’ নামের একটি এআই ফিচারের কার্যক্ষমতা দেখিয়েছেন ফেইসবুক প্রধান। ফিচারটি ব্যবহার করে একটি দ্বীপ, গাছপালা ও সমুদ্র সৈকত আছে এমন একটি ভার্চুয়াল জগৎ তৈরি করে দেখান তিনি।

এ ছাড়াও এআই নির্ভর ‘ইউনিভার্সাল স্পিচ ট্রান্সলেটর’ নির্মাণের ঘোষণাও দিয়েছেন জাকারবার্গ।

“যে কারো সঙ্গে যে কোনো ভাষায় কথা বলার সক্ষমতা আসলে একটি সুপারপাওয়ার যা চিরদিন স্বপ্নই ছিল,” বলেন জাকারবার্গ।

‘বিল্ডার বট’ মেটা’র ‘এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট’ প্রযুক্তি আরো উন্নত করার লক্ষ্যে পরিচালিত ‘কেয়ারআওকি’ প্রকল্পের অংশ ছিল বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি। সাধারণ ব্যবহারকারীরা ভিআর হেডসেট বা গ্লাস ব্যবহার করে যখন ভার্চুয়াল জগতে প্রবেশ করবেন, তখন “এআইগুলো আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে পৃথিবীকে দেখার” সুযোগ পাবে বল মন্তব্য করেছেন জাকারবার্গ।

এ ছাড়াও মেটা’র চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যবহৃত এআই ব্যবস্থা ভার্চুয়াল দুনিয়ায় গোপনতা রক্ষা করবে, স্বচ্ছতা বজায় রাখবে এবং দায়িত্বশীল হবে বলে ‘প্রতিশ্রুতি’ দিয়েছেন জাকারবার্গ।

গেল ১০ বছর ধরেই এআই প্রকল্পে বিনিয়োগ করে আসছে ফেইসবুক। এই খাতের বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞদের একজন ইয়ান লেকুন-কেও এআই বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

জানুয়ানি মাসেই নতুন এআই সুপার কম্পিউটার নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে মেটা। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, ২০২২ সালের মাঝামাঝি নাগাদ নির্মাণ কাজ শেষ হলে বিশ্বের সর্বোচ্চ গতির সুপার কম্পিউটার হবে সেটি।

গেল বছরের অক্টোবরে নাম পাল্টে ‘মেটা’ হয়েছে ‘ফেইসবুক’। সমালোচকদের মতে, সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেনের ফাঁস করা নথিপত্রের ফলে সৃষ্ট বিতর্ক থেকে দূরত্ব সৃষ্টি করতেই সে সময় ‘রিব্র্যান্ডিং’ করেছিল ফেইসবুক।

নাম পাল্টানোর পর থেকে ‘মেটাভার্স’ নিয়ে বেশ জোরোসোরেই প্রচারণা চালাচ্ছেন জাকারবার্গ ও তার প্রতিষ্ঠান। এই প্রকল্প ত্বরান্বিত করতে ইউরোপে ১০ হাজার নতুন কর্মী নিয়োগ দাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে মেটা।

তবে এ ধরনের ভার্চুয়াল দুনিয়া নিয়ে শঙ্কিত সমালোচকরা। বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই উদীয়মান খাতে আধিপত্য করতে দেওয়া উচিত কি না, আর ব্যবহারকারীরাই বা কতোটা নিরাপদ থাকবেন বিশেষজ্ঞদের দিক থেকে সে প্রশ্ন উঠেছে জোরেশোরেই।

এই খাতে মেটা তথা ফেইসবুকের অংশগ্রহণ সমর্থন করেন না খোদ ফেইসবুকের প্রথম দিককার বিনিয়োগকারীদের একজন রজার ম্যাকনামি। ফেইসবুককে একটি ‘ডিস্টোপিয়ান’ মেটাভার্স সৃষ্টি করার সুযোগ দেওয়া উচিত নয় বলে বিবিসি’র কাছে মন্তব্য করেন তিনি। ব্যবহারকারীর গোপনতা এবং নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে মিথ্যাচার ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যে প্রচারণা বন্ধে ফেইসবুকের ব্যর্থতার জেরেই ওই মন্তব্য করেন তিনি।

মেটাভার্স নিয়ন্ত্রণ অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের থেকে আরো কঠিন হবে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন মেটা’র প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু বসওর্থ। অন্যদিকে, মেটাভার্সে ব্যবহারকারীদের হাতে আরো বেশি নিয়ন্ত্রণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।