কোভিড নীতিমালা: টুইটারে ‘নিষিদ্ধ’ মার্কিন কংগ্রেস সদস্য

নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে কোভিড মহামারীর তথ্যের প্রচারে আগের চেয়ে সতর্ক হয়েছে সামাজিক মাধ্যমগুলো, নীতিমালা কঠোর করে বেড়েছে ভুয়া তথ্য ও মিথ্যাচার ঠেকানোর তৎপরতা। তারই অংশ হিসেবে এবার টুইটারে নিষিদ্ধ হয়েছেন এক মার্কিন কংগ্রেস সদস্য।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Jan 2022, 09:31 AM
Updated : 3 Jan 2022, 10:15 AM

চারবারের বেশি কোভিড নীতিমালা ভঙার কারণে জর্জিয়ার কংগ্রেস সদস্য মার্জোরি টেইলর গ্রিনের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট “স্থায়ীভাবে স্থগিত” করেছে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার।

এই প্রসঙ্গে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জকে টুইটার মুখপাত্র কেটি রোসবরো জানিয়েছেন, প্ল্যাটফর্মের কোভিড-১৯ নীতিমালা “বারবার ভাঙার” কারণে “স্থায়ীভাবে স্থগিত” করা হয়েছে গ্রিনের অ্যাকাউন্ট।

“আমরা আগেই পরিষ্কার বলেছিলাম যে, বারবার নীতিমালা ভাঙলে স্ট্রাইক ব্যবস্থা অনুযায়ী আমরা ওই অ্যাকাউন্টগুলো স্থায়ীভাবে স্থগিত করবো।”

২০২১ সালের মার্চ মাস থেকে ‘ফাইভ-স্ট্রাইক’ ব্যবস্থা চালু করেছে টু্‌ইটার। কোভিড-১৯ নিয়ে কোনো পোস্টে ভুয়া বা মিথ্যা তথ্য থাকলে ওই অ্যাকাউন্ট লক করে দেয় সাইটটি। যতোবার অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ধরনের ভুয়া তথ্য সম্বলিত পোস্ট শেয়ার করা হবে, ততো লম্বা হবে ওই শাস্তিমূলক পদক্ষেপ।

কিন্তু পঞ্চমবারের মতো ‘স্ট্রাইক’ হলে অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে স্থগিত করে টুইটার। কোন টুইটের কারণে টেইলম পঞ্চম স্ট্রাইকের ভুক্তভোগী হয়েছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি ভার্জ। তবে বার্তাসংস্থা বিবিসি বলছে, শনিবার গ্রিন যুক্তরাষ্ট্রে “কোভিড টিকার কারণে মৃত্যুর হার অসম্ভবরকম বেশি” টুইট করার পরই ‘নিষিদ্ধ’ হয়েছে তার অ্যাকাউন্ট।

নিষিদ্ধ হওয়ার পর টুইটারকে “আমেরিকার শত্রু” বলে আখ্যা দিয়েছেন গ্রিন। বিকল্প সামাজিক মাধ্যম হিসেবে পরিচিত টেলিগ্রামে লম্বা পোস্ট দিয়ে ৪৭ বছর বয়সী কংগ্রেস সদস্য বলেছেন, “সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো সত্যের প্রচার বন্ধ করতে পারবে না।” টুইটার “কমিউনিস্ট বিপ্লবের” বেনামী সমর্থকদের সহযোগিতা করছে, এমন অভিযোগও তুলেছেন তিনি।

গ্রিনের দাবি, ‘ভ্যাক্সিন অ্যাডভার্স ইভেন্ট রিপোর্টিং সিস্টেম (ভিএইআরএস)’ ডেটাবেইজ থেকে পাওয়া তথ্য টুইট করায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে তার ব্যক্তিগত টুইটার অ্যাকাউন্ট। কোভিড টিকার বিরূপ প্রভাব সম্পর্কিত তথ্য সংরক্ষণ করে ডেটাবেইজটি।

গেল বছর প্ল্যাটফর্মের নীতিমালা ভঙ্গের কারণে একাধিকবার গ্রিনের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছিল টুইটার। ভার্জ বলছে, প্রথমবার গ্রিনের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছিল টুইটারের “সিভিক ইন্টেগ্রিটি পলিসি” লঙ্ঘনের অভিযোগে। এরপর কোভিড-১৯ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য পোস্ট করায় অ্যাকাউন্টটি স্থগিত করা হয়েছিল আরো দুইবার।

তবে, কংগ্রেস সদস্য হিসেবে টুইটারে গ্রিনের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্টটি এখনও অক্ষত আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি; অ্যাকাউন্টটি সচল থাকলেও তাতে নিয়মিত পোস্ট করেন না গ্রিনের কর্মীরা।

২০২০ সালের নির্বাচনের পর থেকে গ্রিন ওয়াশিংটনের সবচেয়ে সমালোচিত রাজনীতিবিদে পরিণেত হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছে বিবিসি। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে গলা মিলিয়ে ২০২০ সালের নির্বাচনে বড় জালিয়াতির অভিযোগ তুলে সোচ্চার হয়েছিলেন গ্রিন, যদিও পরে ধোপে টেকেনি ওই অভিযোগ।

অতীতে যুক্তরাষ্ট্রের উগ্র ডানপন্থী ও ষড়যন্ত্রবাদী সংগঠন ‘কিউঅ্যানন (QAnon)’--এর সঙ্গেও গ্রিনের সংশ্লিষ্টতার গুঞ্জন শোনা গেছে বিভিন্ন সময়ে।