২০২১ সালের চতুর্থ প্রন্তিকে ওয়াল স্ট্রিট বিশ্লেষকদের ধারণা ছিল মোট গাড়ি সংখ্যা দাড়ঁবে দুই লাখ ৬৩ হাজার।
টেসলার অক্টোবর-ডিসেম্বর সরবরাহ এক বছর আগের একই প্রান্তিকের তুলনায় শতকরা ৭০ ভাগ বেশি। আর ঠিক আগের প্রান্তিকের তুলনায় এটি ৩০ ভাগ বেশি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
স্বাভাবিকভাবেই ‘টুইটমাস্টার’ সিইও টুইটে বলেছেন, “দুর্দান্ত কাজ দেখিয়েছে টেসলার বৈশ্বিক দল!”
টুইটে বৈশ্বিক দলের কথা বিশেষ করে উল্লেখ করার কারণ সম্ভবত এই উৎপাদনে বড় ভূমিকা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির চীনা কারখানার।
পণ্য সুরক্ষা নিয়ে ভোক্তাদের অভিযোগ, তীব্র প্রতিযোগিতা এবং পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থার চাপ বাড়লেও বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির নির্মাণ প্রতিষ্ঠানটি উৎপাদন চীনে উৎপাদন বাড়িয়ে নিতে পেরেছে।
চীনে তৈরি গাড়িগুলো টেসলা সরবরাহ করে ইউরোপ এবং কিছু এশিয়ার দেশে।
উৎপাদন বৃদ্ধির বড় চমকটি টেসলা দেখিয়েছিল ২০২১ সালে। আগের বছরের তুলনায় সেবার উৎপাদন বেড়েছিল শতকরা ৮৭ ভাগ।
এর পর গত অক্টোবরে মাস্ক বলেন, টেসলা “বেশ কিছুদিনের জন্য” বার্ষিক উৎপাদন বৃদ্ধির হার শতকরা ৫০ ভাগের ওপরেই রাখতে পারবে।
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম ‘লুপ ভেঞ্চার্সে’র ব্যবস্থাপনা অংশীদার জিন মুন্সটার রোববার বলেন, “তারা সমস্ত প্রতিকূলতাকে পরাজিত করেছে।”
“প্রথমটি হ'ল তাদের পণ্যগুলির আকাশচুম্বি চাহিদা তৈরি হয়েছে। আর দ্বিতীয়টি হ'ল তারা সেই চাহিদা পূরণের জন্য দুর্দান্ত কাজ করছে।”
মুন্সটার জানান, তার আশা ছিল টেসলা তার নতুন কারখানা, সরবরাহ চেইনে সমস্যা এবং অন্যান্য সীমাবদ্ধতার পরও এ বছর প্রায় ১৩ লাখ গাড়ি তৈরি করতে পারবে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা জাখারি কার্কহর্ন অক্টোবরে আভাস দিয়েছিলেন, টেক্সাস এবং বার্লিনের নতুন কারখানায় কতো দ্রুত উৎপাদন বাড়াতে পারবে সেটি ঠিক অনুমান করা কঠিন। দুটি কারখানাতেই নতুন উৎপাদন কৌশল এবং আনকোড়া নতুন দল ব্যবহার করছে প্রতিষ্ঠানটি।
ঘাটতির ‘পাগলা ঘোড়া’
২০২০ সালে, বিভিন্ন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মহামারী এবং লকডাউনের কারণে চিপ অর্ডার কমিয়ে আনে। অন্যদিকে টেসলা তার প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে উৎপাদন কমানোর কোনো ভাবনাই প্রশ্রয় দেয়নি।
বেশিরভাগ গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় টেসলা খানিকটা ভিন্ন পথেই হাঁটে। প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের প্রয়োজনীয় চিপের কিছু অংশ নিজেরাই নকশা করে। পাশাপাশি, ওই পরিস্থিতিতে যাতে সহজলভ্য চিপ ব্যবহার করা যায় সেজন্য গাড়ির সফটওয়্যার তারা নিজেরাই নতুন করে প্রোগ্রাম করেছে বলে জানিয়েছেন মাস্ক।
মাস্ক আগে বলেছিলেন, “২০২১ সালটি সরবরাহ ঘাটতির ‘পাগলা ঘোড়া’র বছর হতে যাচ্ছে। অবশ্য অক্টোবরে তিনি আশা প্রকাশ করেন, সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠা যাবে ২০২২ সালেই।
অক্টোবরেই গাড়ি ভাড়ার প্রতিষ্ঠান কোম্পানি হার্টজ এক লাখ গাড়ি অর্ডার করে টেসলায়। ওই সংবাদের পরপরই শেয়ার বাজারে প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূল্য এক ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। গত বছর সব মিলিয়ে টেসলার শেয়ার মূল্য বেড়ে দেড়গুণ হয়েছে।