পুরো বিশ্বে চিপ সঙ্কটেও ভালো চলছে এএমডি’র উৎপাদন

করোনা মহামারী প্রভাবে সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় চিপ সঙ্কটের মুখে পড়েছে বৈশ্বিক প্রযুক্তি শিল্প; ধাক্কা খেয়েছে একাধিক শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন প্রক্রিয়া। এর মধ্যে ব্যতিক্রম চিপ নির্মাতা ‘অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস (এএমডি)। ভবিষ্যৎ চাহিদা বিষয়ে কয়েক বছর আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া থাকে বলে সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়লেও তার কারণে এএমডি’র উৎপাদনে বড় কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির এক শীর্ষ কর্মকর্তা।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Nov 2021, 11:09 AM
Updated : 3 Nov 2021, 11:09 AM

মহামারী চলাকালীন ঘরে আটকা পড়েছিলেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। ওই সময়ে প্রযুক্তিপণ্যের বাজারে চাহিদা বেড়েছে সেমিকন্ডাক্টর চিপের। যানবাহন থেকে শুরু করে মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক গ্যাজেটে ব্যবহৃত হয় সেমিকন্ডাক্টর চিপ।

এই চিপ সরবরাহের অভাবে প্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যবস্থা থমকে গিয়েছিল। কিন্তু ওই একই সময়ে এএমডি বাজার দখল বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। নতুন মডেলের প্রসেসর চিপ বাজারে এনে শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী ইনটেলকে হটিয়ে পিসি এবং সার্ভার বাজারের বড় একটা অংশ দখল করে নিয়েছে এএমডি।

“আমরা যেন টানা কয়েক মাস এমনকি কয়েক বছরের সরবরাহ নিয়ে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারি সে জন্য আমরাদের সরবরাহ ব্যবস্থার দায়িত্ব থাকা দলটি কাজ করেছে” -- পর্তুগালের লিসবনে আয়োজিত ‘ওয়েব সামিট’ সম্মেলনে এই বক্তব্য দিয়েছেন এএমডি’র প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মার্ক পেপারমাস্টার।

“সবাইকেই সরবরাহ ব্যবস্থার উপর বাড়তি জোর দিতে হয়েছে। কিন্তু আমরা সেই কাজটি করেছি মহামারীর একদম শুরু থেকেই।”-- যোগ করেন তিনি।

রয়টার্স জানিয়েছে, তাইওয়ানের টিএসএমসি’র মতো তৃতীয় পক্ষীয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক ব্যবসা করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর চিপ সঙ্কটের প্রভাব পড়েছে তুলনামূলক কম। এএমডি-ও নিজের কারখানায় চিপ উৎপাদন করে না, বরং উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্য টিএসএমসি এবং  গ্লোবালফাউন্ড্রিসের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক ব্যবসা করে। অন্যদিকে, নিজস্ব কারখায় চিপ উৎপাদন করে বাজারে শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী ইনটেল।

তবে ‘ওয়েব সামিটে’ পেপারমাস্টার বলেন, “আমরা সর্বোন্নত সেমিকন্ডাক্টর নোড ব্যবহার করছি এবং এই খাতের অনেক বড় ক্রেতা আমরা। তাই সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারায় সেটি নানাভাবেই সাহায্য করেছে আমাদের।” 

রয়টার্স জানিয়েছে, বৈশ্বিক চিপ সঙ্কটে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে অটোমোবাইল নির্মাণ শিল্প। সেই তুলনায় এএমডির উপর তুলনামূলক কম প্রভাব পড়ার কারণ হচ্ছে, বহুল উৎপাদিত পুরনো মডেলে চিপ কেন্দ্রিক নয় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা। বরং, আকারে ছোট এবং অত্যাধুনিক চিপের নকশা করে এএমডি।

লম্বা সময় ধরে মুনাফার হার বেশি এমন চিপ নির্মাণেই জোর দিয়ে আসছে এএমডি। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটি যে শুধু নিজেদের সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে পারছে তাই নয়, বাড়ছে মুনাফাও। চলতি বছরে প্রতিষ্ঠানটির আয় আগের বছরের তুলনায় ৬৫ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।