অ্যামাজনের অভিযোগে অ্যাপ স্টোর থেকে সরলো ‘ফেকস্পট’

পণ্যের ভুয়া রিভিউ চিহ্নিত করার জন্য সুপরিচিত অ্যাপ ‘ফেকস্পট’কে অ্যাপ স্টোর থেকে মুছে দিয়েছে অ্যাপল। অনলাইন রিটেইল জায়ান্ট অ্যামাজনের কাছ থেকে অভিযোগ আসার পর এই পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন টেক জায়ান্ট।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2021, 10:05 AM
Updated : 18 July 2021, 10:05 AM

অ্যামাজন সাইটে তালিকাভুক্ত পণ্যের রিভিউ বিশ্লেষণ করে সেগুলোকে ‘এ’ থেকে ‘এফ’ পর্যন্ত গ্রেড দিতো অ্যাপটি। এ ছাড়াও ক্রেতাদেরকে গ্রাহক সন্তুষ্টির ভিত্তিতে পণ্যের ব্যাপারে সুপারিশ করতো ফেকস্পট।

ফেকস্পটের ব্যাপারে অ্যামাজনের অভিযোগ জানানোর কারণ কিছুটা ভিন্ন। নতুন নকশায় ফেকস্পট অ্যাপের ভেতরেই অ্যামাজনের ওয়েবসাইট দেখতে পাচ্ছিলেন ক্রেতারা, সেটির উপরেই নিজ কনটেন্ট ও কোড দিয়ে রেখেছিল ফেকস্পট। অ্যামাজন কোনো অ্যাপকেই এ ধরনের কাজ করতে দেয় না বলে জানিয়েছে। এটি তাদের ক্রেতাদের জন্য বিভ্রান্তি তৈরি করছে বলে অ্যাপলের কাছে অভিযোগ করে প্রতিষ্ঠানটি।

এ প্রসঙ্গে এক অ্যামাজন মুখপাত্র বলেছেন, “যে অ্যাপটির কথা বলা হচ্ছে সেটি আমাদের বিক্রেতা ও তাদের পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদেরকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিতো, এটি বিক্রেতাদের ব্যবসায়ের ক্ষতি করছিল এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি তৈরি করছিল।”

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি উল্লেখ করেছে, শুক্রবার বিকেলে নিজ পর্যালোচনা শেষে অ্যাপ স্টোর থেকে ফেকস্পটকে মুছে দিয়েছে অ্যাপল।

অনলাইনের খুচরা বিক্রেতাদের জন্য বড় একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিভ্রান্তিকর ও ভুয়া ব্যবহারকারী রিভিউ। অ্যামাজন নিজেই এ সমস্যার সমাধানে প্রচেষ্টা বাড়িয়েছে। বলে রাখা ভালো, অ্যামাজনের তৃতীয়-পক্ষীয় বাজারে কয়েক কোটি বিক্রেতা রয়েছেন। গোটা অ্যামাজনের অর্ধেকেরও বেশি বিক্রি হয় এ অংশটি থেকে। কিন্তু ভুয়া রিভিউ, নকল ও অনিরাপদ পণ্যে সয়লাব হয়ে গেছে বাজারটি। যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিয়ন্ত্রকরাও অ্যামাজনের সাইটে এবং বাইরে ভুয়া রিভিউ ঠেকাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ভুয়া রিভিউ শনাক্ত করতে এবং ক্রেতাদেরকে সহায়তা করতে ফেকস্পটের মতো কিছু তৃতীয় পক্ষীয় প্রতিষ্ঠান ও অ্যাপ কাজ করে যাচ্ছে। এরকম সেবাদাতাদের তালিকায় রয়েছে, ‘রিভিউমেটা’ এবং ‘রিকনবব’।

অ্যাপল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মেধাস্বত্ত্ব অধিকার প্রশ্নে ফেকস্পটের সঙ্গে আট জুন বিতণ্ডতায় জড়িয়ে পড়ে অ্যামাজন। অ্যাপলের পক্ষ থেকে ফেকস্পটকে অ্যাপ স্টোরে অ্যাপ রাখার রাস্তা বলে দেওয়া হয়েছিল এবং “যথেষ্ট সময়” দেওয়া হয়েছিল সমস্যা সমাধানে। এমনকি অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপ মুছে দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগেও ২৯ জুন ফেকস্পটের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছিল এ ব্যাপারে।

ফেকস্পট আদতে কোন অ্যাপ স্টোর নীতিমালা লঙ্ঘন করেছিল, সে ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি অ্যাপল মুখপাত্র। তবে অ্যামাজন উল্লেখ করেছে, অ্যাপল অ্যাপ স্টোর নীতিমালার দুটি ‘সাবসেকশন’ লঙ্ঘন করেছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, অ্যাপ স্টোরে অ্যাপকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের তৃতীয় পক্ষীয় সেবার কনটেন্ট ব্যবহারের, আর্থিক সুবিধা লাভের, প্রবেশের বা দেখানোর অনুমতি রয়েছে। অন্যটি হলো, অ্যাপ ভুল তথ্য এবং ফিচার সম্পর্কিত সেবা দিতে পারবে না।

অ্যামাজন আরও দাবি করেছে, ফেকস্পটের কোডিং কৌশল অ্যাপটিকে গ্রাহক ডেটা সংগ্রহ এবং ট্র্যাক করার সুযোগ করে দিত। গত জানুয়ারিতে অ্যামাজন একই দাবি তুলেছিল পেপাল মালিকানাধীন ‘হানি’র বিরুদ্ধেও। হানি মূলত একটি ব্রাউজার এক্সটেনশন যা ব্যবহারকারীদের অনলাইনে কেনাকাটা করার সময় কুপন খুঁজে পেতে সহায়তা করে।

ফেকস্পটের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী সাউদ খালিফা অ্যামাজনের দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, অ্যাপে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। খালিফা ফেকস্পটের কিছু ডেটা সংগ্রহের ব্যাপারে জানান, তারা তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছে ডেটা বিক্রি করেন না।