রোবট চোখে লাল গ্রহ: মঙ্গলের পিঠে নাসার রোভারের প্রথম ১০০ দিন

লাল গ্রহ মঙ্গলে অবতরণের পর মঙ্গলের হিসাবে শততম দিন পার করেছে নাসার রোভার পারসিভের‌্যান্স।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2021, 03:00 AM
Updated : 3 June 2021, 03:04 AM

সৌরজগতে পৃথিবীর নিকট প্রতিবেশী এই গ্রহে কখনও প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা, মঙ্গলের ভূতত্ত্ব কেমন, অতীতে এর জলবায়ু কেমনি ছিল- সেসব তথ্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে এই রোবট।

বিবিসি জানিয়েছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলের বিষুবরেখার উত্তরে জেজেরো ক্রেইটার নামের ৪৯ কিলোমিটার চওড়া এক মৃত জ্বালামুখে অবতরণের পর নাসার এই রোবট অবাক করা কিছু ছবি তুলেছে।

ওই রোভারের সঙ্গেই পাঠানো ক্ষুদে হেলিকপ্টার ইনজেনুইটিও মঙ্গলের আকাশে উড়ে ছবি তুলে পাঠিয়েছে পৃথিবীতে। ইতিহাসে প্রথমবার অন্য গ্রহে নিয়ন্ত্রিত ফ্লাইট পরিচালনার ইতিহাস গড়েছে ইনজেনুইটি।

মঙ্গলপৃষ্ঠে এই অভিযানের কিছু নির্বাচিত ছবি নাসার কাছ থেকে নিয়ে প্রকাশ করেছে বিবিসি।

৬ এপ্রিল। ইনজেনুইটি হেলিকপ্টারকে পাশে রেখে ওয়াটসন ক্যামেরা ব্যবহার করে এই সেলফিটি তোলে পারসিভের‌্যান্স। মঙ্গল থেকে পারসিভের‌্যান্সের পাঠানো ৬২টি একক চিত্র জুড়ে এই ছবিটি তৈরি হয়েছে। ছবি: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক/এমএএসএসএস
মঙ্গলে অবতরণের পর পারসিভের‌্যান্সের নিচ দিয়ে নামানো হচ্ছে হেলিকপ্টার ইনজেনুইটিকে। সেই ছবিও পাঠিয়েছে নাসার রোভার। ছবি: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক/এমএএসএসএস
মঙ্গলের পাতলা বায়ুমণ্ডলে আকাশ ভ্রমণের সম্ভাবনা বাস্তব করার ক্ষেত্রে এক কেজি ৮০০ গ্রাম ওজনের হেলিকপ্টার ইনজেনুইটিকে মানুষের কারিগরি নৈপুণ্যের একটি নজির হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ছবি: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক/এইউএস
১৯ এপ্রিল। মঙ্গলপৃষ্ঠ থেকে তিন মিটার বা ১০ ফুট উঁচুতে কয়েক সেকেন্ড উড়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে হেলিকপ্টার ইনজেনুইটি। পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো গ্রহে এটাই প্রথম যন্ত্রচালিত, নিয়ন্ত্রিত ফ্লাইট। ছবির মাঝখানে উড়তে দেখা যাচ্ছে ছোট্ট ইনজেনুইটিকে।  ছবি: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক
মঙ্গলের উপর থেকে ইনজেনুইটির ধারণ করা প্রথম ছবি রঙিন এটি। ছবিটি তোলার সময় মঙ্গলে নিজের দ্বিতীয় ফ্লাইটে মাটি থেকে পাঁচ মিটার বা ১৬ ফুট উচ্চতায় কাত হয়ে দুই মিটার বা ৬ ফিট দূরত্ব ভ্রমণ করে আবার উড্ডয়নস্থলে ফিরে আসে এই হেলিকপ্টার। ছবিতে মঙ্গলের মাটিতে রোভারের চাকার দাগ এবং ইনজেনুইটির ছায়া দেখা যাচ্ছে। ছবি: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক
তৃতীয় ফ্লাইটে ইনজেনুইটি রোভার পারসিভের‌্যান্সের ছবি তুলেছে। ওই সময়, ক্ষুদে হেলিকপ্টারটি পাঁচ মিটার উচ্চতায় উড়ছিল, পারসিভের‌্যান্স থেকে দূরত্ব ছিল প্রায় ৮৫ মিটার বা ২৭৮ ফুট। ছবির বাঁ দিকে ইনজেনুইটির একটি পায়ের অংশও চলে এসেছে। ছবি: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক
৭ মে। ইনজেনুইটি মঙ্গলপৃষ্ঠ থেকে ১০ মিটার বা ৩৩ ফুট উঁচুতে উড়ে ১২৯ মিটার বা ৪২৩ ফুট দূরে নতুন একটি জায়গায় অবতরণ করে। ছবি: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক
জেজেরো জ্বালামুখে অবতরণ করা পারসিভের‌্যান্স এখন থেকে দুই মাস আগে প্রথমবার চলতে শুরু করে। মঙ্গল গ্রহের ভূতত্ত্ব, বায়ুমণ্ডল ও পরিবেশ পরিস্থিতি জানতে এক টন ওজনের এই রোবট যানটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি বহন করছে। ছবি: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক
পারসিভের‌্যান্সের ভাণ্ডারে আছে একটি লেজার, যার মাধ্যমে লাল গ্রহের ভূতাত্ত্বিক উপাদান থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করে রোভারটি। ১৫ সেন্টিমিটার বা ছয় ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এই পাথর খণ্ডটি পরীক্ষা করার সময় লেজারের সৃষ্ট কয়েকটি বিন্দু দেখা যাচ্ছে এই ছবিতে। ছবি: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক/এইউএস
রোভারটির সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ক্যামেরাও যুক্ত রয়েছে। এই ছবিটি পারসিভের‌্যান্সের ‘ডান চোখ’-এ মাস্টক্যাম-জেড দিয়ে তোলা। রোভারের এই একজোড়া ক্যামেরা মানুষের চোখের মতো ‘স্টেরিও ভিউ’ দিতে পারে। ছবি: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক/এইউএস
এই ছবিটি পারসিভের‌্যান্সের ‘বাঁ চোখ’-এর মাস্টক্যাম-জেড দিয়ে তোলা। মিশনের ষষ্ঠ সপ্তাহে এ ছবিটি পাঠকের বিচারে ‘সপ্তাহের সেরা ছবি’ নির্বাচিত হয়েছে। ছবি: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক/এইউএস
এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সান্তা ক্রুজ পাহাড়কে। সেই পহাড় থেকে রোভারটির দূরত্ব আড়াই কিলোমিটারের মত। পুরো এই দৃশ্যটাই মঙ্গলের জেজেরো জ্বালামুখের ভেতরে। ছবি: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক/এইউএস/এমএসএসএস

প্রাথমিকভাবে পারসিভের‌্যান্স রোভার মঙ্গলপৃষ্ঠে অনুসন্ধান পরিচালনা করবে এক মঙ্গল-বছর ধরে; পৃথিবীর হিসাবে যা মোটামুটি দুই বছরের সমান।