‘বিষাক্ত আচরণ’ ঠেকাতে নতুন বিধি আনছে উইকিপিডিয়া

স্বেচ্ছাসেবকদের “বিষাক্ত আচরণ” ঠেকাতে নিজেদের প্ল্যাটফর্মের জন্য নতুন ‘কোড অফ কনডাক্ট’ বা আচরণ বিধি আনছে উইকিপিডিয়া।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2020, 06:03 PM
Updated : 23 May 2020, 06:03 PM

বিবিসি'র এক প্রতিবেদন বলছে, এ বছরের শেষ নাগাদ নতুন নীতিমালা যোগ করার পক্ষে ভোট দিয়েছে প্ল্যাটফর্মটির অভিভাবক সংস্থা উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন।

উইকিপিডিয়ার ভূক্তি স্বেচ্ছাসেবকরা লেখেন এবং সম্পাদনা করে থাকেন।

অনেকেই, বিশেষ করে নারী ও এলজিবিটিকিউ কমিউনিটির সদস্যরা অন্যান্য সম্পাদকদের দিক থেকে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে উইকিমিডিয়ার ট্রাস্টি বোর্ড স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, “শিষ্টাচার প্রতিষ্ঠানটির মূল্যবোধের একেবারে গোড়ার বিষয়”।

“একটি নিরাপদ, অন্তর্ভূক্তিমূলক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে আমাদের অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে যেখানে নিজেকে কেউ অবাঞ্ছিত মনে করবেন না, পাশাপাশি নিজের কাজের ও দৃষ্টিভঙ্গির মূল্যায়ন পাবেন”। - বলেছেন উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ক্যাথরিন মা’র।

“আমাদের লক্ষ্য বিশ্বের পরিপূর্ণ জ্ঞান এবং আমাদের যাত্রার জন্য সেটি গুরুত্বপূর্ণ।”

নতুন নিয়মে আচরণ বিধি লঙ্ঘন করলে প্ল্যাটফর্ম থেকে নিষিদ্ধ করা এবং প্রবেশাধিকার সীমিত করার মতো বিধান থাকছে। আগের হয়রানিগুলোও পর্যালোচনা করে দেখার সুযোগ থাকবে নতুন বিধিতে।

ইন্টারনেট জগতে নির্ভরযোগ্য তথ্যের জন্য ভরসার জায়গা হিসাবে স্থান করে নিলেও সাইটটির সম্পাদকদের ব্যাপারে প্রায় এক দশক ধরেই শোনা যাচ্ছিল নানাবিধ বৈষম্য ও হয়রানির অভিযোগ। ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের এক জরিপেও উঠে এসেছে উইকিপিডিয়া সম্পাদকদের মধ্যে বিদ্যমান লিঙ্গ বৈষম্যের কথা।

অনেক এলজিবিটিকিউ শ্রেণিভূক্ত সম্পাদক নিরাপত্তার ব্যাপারে শঙ্কিত অনুভব করেন বলে জানিয়েছেন। অনেক নারী সম্পাদক জানিয়েছেন, পুরুষ সম্পাদকরা তাদের লেখার উপর মতব্বরি চালান বা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখান।

গত বছর নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক নিবন্ধে উইকিপিডিয়ার ট্রান্সজেন্ডার সম্পাদকদের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। একজন এমনকি জানিয়েছিলেন মৃত্যু হুমকির কথা।

ফেইসবুক ও টুইটারের মতো সামাজিক মাধ্যম সাইট না হলেও সম্পাদকদের নিজেদের মধ্যে কথা বলার সুযোগ রয়েছে উইকিপিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। প্রয়োজনে অন্যের লেখা বদলে দেওয়ার সুযোগও রাখা হয়েছে। এখান থেকেই মূলত হয়রানির সূত্রপাত।

অনেকে কোনো কাজ করার পর দেখা যায় আরেকজন সেটিকে কয়েক মূহূর্তের মধ্যেই বদলে দিয়েছেন। ফলে ফের পুরো কাজটি করতে হয় প্রথম সম্পাদককে। এভাবে শুরু হয়ে যায় সম্পাদনার এক একেঘেয়ে লড়াই।

দুটি ধাপে নতুন আচরণ বিধি তৈরি করবে প্রতিষ্ঠানটি। প্রথম ধাপে আসবে ব্যক্তি ও ভার্চুয়াল ইভেন্টের নানাবিধ নীতিমালা। এর মধ্যে চ্যাট রুম ও অন্যান্য উইকিমিডয়া প্রকল্পও যুক্ত হবে। অগাস্টের ৩০ তারিখ নাগাদ এ ধাপটিকে আনুষ্ঠানিক রূপ দেবে বোর্ড।

দ্বিতীয় ধাপে থাকবে নিয়ম ভাঙলে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে বিষয়গুলোর কথা। এই ধাপটি এ বছরের শেষ নাগাদ নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে বোর্ডের।